Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

দেওয়ালে সাঁটা নোটিসে বিপত্তি

তৃণমূল স্তরে কাজ করা আশাকর্মীদের উপরেও চাপ বেড়ে গিয়েছে। এত দিন তাঁদের ঘরে ফেরা লোকজনকে ঘরের থাকার প্রয়োজন বোঝাতে হচ্ছিল। এ বার তাঁদের বোঝাতে হচ্ছে যে নোটিস সাঁটা মানেই ওই বাড়ির বাসিন্দা আক্রান্ত, এমনটা নয়।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ ০৩:৫৯
Share: Save:

জেলার বাইরে থেকে ফিরে হোম কোয়রান্টিনে থাকা লোকজনকে ঘরে আটকাতে বাড়়ির দেওয়ালে নোটিস সেঁটেছে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু তাতেই নতুন করে সমস্যা দেখা দিতে শুরু করেছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। কারণ একটাই— আতঙ্ক। নোটিস দেখে কিছু প্রতিবেশী মনে করতে শুরু করেছেন যে ওই লোকের করোনা আক্রান্ত হওয়া প্রায় নিশ্চিত। তাঁরা দাবি করতে শুরু করেছেন, ওই লোককে ঘরে রাখা যাবে না, হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।

এ নিয়ে ক্রমশ চাপে পড়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের কর্তারা। তৃণমূল স্তরে কাজ করা আশাকর্মীদের উপরেও চাপ বেড়ে গিয়েছে। এত দিন তাঁদের ঘরে ফেরা লোকজনকে ঘরের থাকার প্রয়োজন বোঝাতে হচ্ছিল। এ বার তাঁদের বোঝাতে হচ্ছে যে নোটিস সাঁটা মানেই ওই বাড়ির বাসিন্দা আক্রান্ত, এমনটা নয়। তিনি বাইরে থেকে আসায় তাঁকে ১৪ দিন ঘরের ভিতরে রেখে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যদি উপসর্গ দেখা দেয়, তবেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হবে।

আশাকর্মী এবং এএনএম-রা গ্রামে গ্রামে বোঝালেও মানুষ যে খুব একটা বুঝতে চাইছে, তা নয়। আপাতত নতুন করে পরিযায়ী শ্রমিকদের জেলায় ফেরার আর কোনও খবর নেই। তবে এই নোটিস সাঁটায় কাজের কাজ যেটা হয়েছে তা হল, কোয়রান্টিনে থাকা লোকজনকে গ্রামের লোকজন এড়িয়ে চলছেন। তাঁদের বাড়িতে সাধারণত কেউ যাতায়াত করছেন না। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত দেওয়ান বলেন, “আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। মানুষকে সাবধান করার জন্য আমরা নোটিস সেঁটেছি। আমরা শুধু চাই, যাতে ওই ব্যক্তি ১৪ দিন ঘরের ভিতরে থাকেন।”

কিন্তু এত কিছুর পরেও কি শেষ পর্যন্ত বাইরে থেকে ফেরা শ্রমিকদের ঘরে আটকে রাখা যাচ্ছে? সত্যিই কি তাঁদের শারীরিক অবস্থার প্রকৃত তথ্য প্রতিফলিত হচ্ছে রিপোর্টে?

জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, এখনও পর্যন্ত রিপোর্টে কোথাও তেমন কোনও সমস্যা নেই। তবে তাঁরা ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। সেই কারণে ব্লকে-ব্লকে ও পুর এলাকায় বিশেষ টিম তৈরি করা হয়েছে। সাধারণ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের দু’জন করে প্রতিনিধিদের নিয়ে এই টিম তৈরি করা হয়েছে। তাঁরা বাইরে থেকে ফেরা লোকেদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করবেন। সেই সঙ্গে একটি ফর্মও পূরণ করবেন। তাতেই প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে বলে দাবি স্বাস্থ্যকর্তাদের।

বার্নিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পরিবারের সংস্পর্শে আসা আরও ১৮ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদেরও হোম কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। এঁদের নিয়ে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৬৭-তে। তাঁরা যে ১৪ দিন গৃহবন্দি থাকবেন, তা নিশ্চিত করতে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে। আচরণবিধিও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE