Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

‘এমন ইদ আগে কখনও আসেনি’

হরিহরপাড়ার ইদগাহ ময়দানে প্রতি বছর ৮-১০ হাজার মানুষ ইদের নমাজ পড়েন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

মফিদুল ইসলাম
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২০ ০৫:০৬
Share: Save:

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইদ পালনের আহ্বানে সাড়া পড়ল ভালই। প্রবীণ ব্যক্তিরাও বলছেন এই ধরনের তাঁরা তাঁদের স্মরণকালের মধ্যে এনন ইদ দেখেননি। জেলা ইমাম নিজামুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ‘‘অতিমারির কারণে প্রশাসন ও আলেম ওলামায়েদের কথা শুনে ভিড় এড়াতে অধিকাংশ মানুষ বাড়িতেই নমাজ পড়েছেন, কোথাও আবার অল্প সংখ্যক মুসল্লি নিয়ে ছোট ছোট জামাত করে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে নমাজ পড়েছেন।’’

হরিহরপাড়ার ইদগাহ ময়দানে প্রতি বছর ৮-১০ হাজার মানুষ ইদের নমাজ পড়েন। এ বার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে চার ফুট বাই চার ফুট দাগ কেটে দেওয়া হয়। দু’টি জামাত করে ইদের নমাজ পড়ান দুই ইমাম। প্রত্যেকের হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেওয়া হয়। মাস্ক ছিল বাধ্যতামূলক। নওদা, আমতলা, পাটিকাবাড়ি, হরিহরপাড়া, ডল্টনপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় এ ভাবেই নমাজ পড়া হয়। কোথাও আট-দশজন মিলে বাড়িতেই নমাজ পড়ার বন্দোবস্ত করেন। ইদের দিন কোলাকুলি থেকেও বিরত ছিলেন অনেকেই। হরিহরপাড়া ইদগাহের ইমাম মুফতি জারজিস হোসেন বলেন, ‘‘লিপিবদ্ধ খুতবার পাশাপাশি বর্তমানে অতিমারি করোনার হাত থেকে কিভাবে রক্ষা পেতে হবে,সে বিষয়েও বার্তা দেওয়া হয়েছে।’’

কিন্তু প্রায় দুই মাস ধরে রোজগার বন্ধ অধিকাংশ পরিবারে। অনেক পরিবারের স্বজনেরা কেউ রয়েছেন ভিন রাজ্যে, কেউ আবার ভিনদেশে। ফলে ইদের দিনেও বিষাদের সুর সেই সমস্ত পরিবারে। খিদিরপুরের বাসিন্দা কামালুদ্দিন সেখের মত সৌদি আরব, কুয়েতে থাকা অনেকের। ফলে নিরানন্দ ভাবেই কাটল তাদের পরিবারের ইদ। কামালুদ্দিনের স্ত্রী রেকশোনা বিবি বলেন, ‘‘দুই নাবালক ছেলে মেয়ে আছে। দু’মাস ধরে ওদের আব্বা টাকাও পাঠাতে পারেনি। বছরকার দিন তাই নতুন পোশাক না হলেও ছেলেমেয়েদের একটু সিমুই আর মাংস রান্না করে দিয়েছি।’’

প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর এ দিন খুলেছিল পোশাকের দোকান। কিন্তু সাধারণ মানুষের হাতে নেই পর্যাপ্ত টাকা। ফলে আশানুরূপ বেচাকেনা হয়নি। ভাটা পড়েছে আতর, সুরমা, টুপি বিক্রিতেও। তার জায়গায় ইদের আগে বিক্রি বেড়েছিল মাস্ক, হ্যান্ডসানিটাইজার, সাবানের। আব্দুল মজিদ শেখ বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে আতর, সুরমা টুপি বিক্রি করছি। কিন্তু এ বছর আতর, সুরমা, টুপির চাহিদা একেবারেই নেই বললেই চলে।’’

ইদের মরসুমে মানুষের হাতে টাকা পর্যাপ্ত না থাকলেও লাচ্চা -সেমুই, মাছ, মাংসের দাম ছিল চড়া। তবে দই মিষ্টির দাম ছিল নাগালের মধ্যে। লাচ্চা-সেমুইয়ের জোগান কম থাকলেও বিক্রি ভালই হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal EID 2020
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE