খুদু শেখ।
নিজেদের চাষের জমি নেই। আর্থিক অবস্থাও ভাল নয়। গ্রামেও কাজ নেই। তাই ঘরের মেঝেতে মার্বেল পাথর বসানোর কাজে পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বই। মাস দুয়েক কাজ করতেই নেমে এসেছিল লকডাউনের খাঁড়া। তাই লরি ভাড়া করে অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে পাড়ি দিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের শক্তিপুরের বাড়িতে। কিন্তু সঙ্গে বয়ে এনেছিলেন করোনা সংক্রমণ।
তবে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে করোনা রোগীদের সেবায় নিজেকে নিয়োগ করেছেন। সে জন্য মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি দাঁড়ানোর সুযোগ পেলেন শক্তিপুরের জোলমাঠপাড়ার যুবক খুদু শেখ। আজ, শনিবার সকালে কলকাতায় রেড রোডে রাজ্যের অন্য ২৪ জন করোনা যোদ্ধার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে মেডেল ও শংসাপত্র নেবেন খুদু।
এদিন কলকাতা থেকে খুদু শেখ বলেন, ‘‘এমন ভাবে যে সম্মান পাব ভাবতে পারিনি।’’
খুদু বিএ দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। বৃদ্ধ বাবা- মা, দাদা-বৌদি ও দুই ভাইপোকে নিয়ে সংসার। এলাকায় তেমন জুতসই কোনও কাজ না থাকায় গত ২৮ জানুয়ারি তিনি মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন। সেখানে মেঝেতে পাথর বসানোর কাজ করছিলেন। আয়ও হচ্ছিল। হঠাৎ গত মার্চে করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশ জুড়ে লকডাউন শুরু হয়। ফলে তিনি সমস্যায় পড়েন। শেষ পর্যন্ত লকডাউনের মাঝে ২০ মে অন্যদের সঙ্গে লরি ভাড়া করে বাড়ি ফেরেন। পরের দিন তাঁর লালারস সংগ্রহ করে। ২৫ মে করোনা পজ়িটিভ হয়। সেদিন তাঁকে মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৩১ মে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। পরে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ প্রশাসন এবং মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অমরেন্দ্রনাথ রায়ের উদ্যোগে মুর্শিদাবাদ ‘কোভিড ওয়ারিয়র’ ক্লাব গড়া হয়। সেই ক্লাবে নাম লেখান খুদুও। পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো জেলার অন্য ৩০ জনের সঙ্গে কলকাতার হাসপাতালে করোনা রোগীদের সাহায্য করার জন্য যান। গত ৭জুলাই থেকে তিনি বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবা করছেন। প্রথম মাসের সাম্মানিক ভাতাও তিনি হাতে পেয়েছেন।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ কোভিড ওয়ারিয়র ক্লাবের এক সদস্যকে সংবর্ধনা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। আমরা জেলায় করোনা থেকে সুস্থ হওয়া পুলিশকর্মীদের সংবর্ধনা দেব।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy