Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

আরও ১৬ জন করোনা আক্রান্ত

১৬ জনকেই বহরমপুর মাতৃসদনে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর, নবগ্রাম শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২০ ১৪:৪৫
Share: Save:

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জানা গিয়েছিল জেলায় আরও ১৪ জনের লালরস পরীক্ষায় করোনা পজ়িটিভের খোঁজ মিলল মুর্শিদাবাদে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শুক্রবার বিকেলে জানা গেল ডোমকলের আরও দু’জনও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এই ১৬ জনকেই বহরমপুর মাতৃসদনে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে। মাতৃসদনে এখন মোট ২৪ জন করোনা আক্রান্ত চিকিৎসাধীন। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ছুটি পেয়েছেন মোট ৮ জন।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে যে ১৪ জনের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছিল, তাঁদের মধ্যে ১১ জন মুম্বই-সহ মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গা থেকে সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে ফিরেছেন, একজন ওড়িশা এবং দু’জন গুজরাতের সুরাট থেকে ফিরেছেন। গত ১৮ মে তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁদের করোনা পজ়িটিভের রিপোর্ট আসতে স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তাঁদের শুক্রবার বহরমপুরে মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এই নিয়ে মুর্শিদাবাদে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩০ জনে। এ ছাড়া জেলার আরও দু’জনের মুর্শিদাবাদের বাইরে করোনা পজ়িটিভ হয়েছে।

মুর্শিদাবাদের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতে ১৪ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পেয়েছি। তাঁরা সকলেই ভিন রাজ্য থেকে ফিরেছিল। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে বৃহস্পতিবার রাতের ১৪ জন পজ়িটিভের মধ্যে নবগ্রাম ব্লকের ৮ জন রয়েছে। ওই ব্লকের খাজুরিয়ার চার জন অন্য ২০ জনের সঙ্গে লরি ভাড়া করে গত ১৬ মে মহারাষ্ট্র থেকে বাড়ি ফিরেছেন। ওই ব্লকেরই নতুন গ্রামের তিন জন নিজেদের খরচে মহারাষ্ট্র থেকে ফিরেছেন এবং এক জন ওডিশা থেকে ফিরেছেন। অন্য দিকে শক্তিপুর, সালার, সাগরদিঘি ও ভগবানগোলা-২ ব্লকের এক জন করে সম্প্রতি মহারাষ্ট্র থেকে বাড়ি ফিরেছেন। এই ১২ জনের নমুনা জেলা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। ডোমকলেরও দু’জন গুজরাত থেকে ফিরেছেন। গুজরাতের সুরাট থেকে জেলায় আসার পথে আসানসোলে তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাঁদের প্রত্যেকের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। তাঁরা যাঁদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তার তালিকা তৈরি করে হোম কোয়রান্টিনে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে মোট ১৬ জন করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদেরও নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্র, গুজরাত, তামিলনাড়ু ও দিল্লিতে করোনার প্রকোপ সব থেকে বেশি। ওই সব জায়গা থেকে মুর্শিদাবাদে ফেরা লোকজনের মধ্যে করোনা পজ়িটিভ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। কলকাতা ফেরত ৬-৭ জনের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। সেই কর্তা বলেন, ‘‘আমরাও সতর্ক রয়েছি। আগের থেকে করোনা পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। ভিন্ রাজ্য ও ভিন্ জেলা ফেরত লোকজনের যতটা সম্ভব নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হচ্ছে।’’ সূত্রের খবর, জেলায় প্রায় ৫ হাজার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রিপোর্ট ইতিমধ্যে পেয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।

তৃতীয় দফার লকডাউনের শেষের দিক থেকে ভিন্ রাজ্যে থেকে মুর্শিদাবাদে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার পরিমাণ বেড়েছে। এক সময় হোম কোয়রান্টিনের মেয়াদ পূর্ণ করে ভিন্ রাজ্য ফেরত শ্রমিকের সংখ্যা আড়াই হাজারে নেমে গিয়েছিল। কিন্তু লকডাউনের তৃতীয় দফার শেষ দিক থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা দল বেধে বাড়ি ফিরছেন। এই মুহূর্তে প্রায় ২৫ হাজার ভিন্ রাজ্য ফেরত পরিযায়ী শ্রমিক ঘরে ফিরে হোম কোয়রান্টিনে রয়েছেন। জেলার বাসিন্দাদের দাবি, লকডাউনের তৃতীয় দফার শেষের দিক থেকে মুর্শিদাবাদে করোনার প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য জামির মোল্লা বলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্যে না খেতে পেয়ে পরিযায়ী শ্রমিকরা চরম সমস্যায় রয়েছেন। ফলে তাঁদের ঘরে ফেরানো খুব প্রয়োজন। তেমনই করোনা সংক্রমণ যাতে ছড়াতে না পারে সে জন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রাখা হোক।’’ জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘যাঁরা ভিন্ রাজ্য থেকে ঘরে ফিরছেন তাঁদের কাছে অনুরোধ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। ঘর ছেড়ে বেরোবেন না। একই সঙ্গে বলব বেশি বেশি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হোক।’’ যদিও জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, ‘‘করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দফতর তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে সব নির্দেশ মেনে চলুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE