Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19

‘আসল’ রোগী ভ্যানিশ, কর্তারা দিশেহারা

দিন কয়েক আগে আসানসোলের একটি নার্সিংহোমের আইসোলেশন সেন্টার থেকে এক যুবক পালিয়ে যান। পরে তাঁর করোনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুস্মিত হালদার
শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২০ ০৩:৩৩
Share: Save:

আশঙ্কাই সত্যি হল। প্রমাণিত হয়ে গেল, এ লোক সে লোক নয়। উধোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চেপেছে। করোনা রোগী ভেবে প্রশাসন যাঁকে ধরে এনেছে তাঁর আসলে করোনা হয়নি। সত্যি যিনি করোনা-আক্রান্ত তিনি এখনও বেমালুম ভ্যানিশ!

তিনি কোথায় তার কূলকিনারা করতে না পেরে প্রবল অস্বস্তিতে রয়েছে জেলা প্রশাসন। সেই সঙ্গে রয়েছে ভয়। কারণ, শরীরে করোনাভাইরাস নিয়ে তিনি কোথায় ঘুরে বেরাচ্ছেন, কার-কার মধ্যে রোগ ছড়়চ্ছেন, কিছুই অনুমান করতে পারছেন না প্রশাসনিক ও স্বাস্থ্যকর্তারা।

দিন কয়েক আগে আসানসোলের একটি নার্সিংহোমের আইসোলেশন সেন্টার থেকে এক যুবক পালিয়ে যান। পরে তাঁর করোনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। শুরু হয় তাঁর খোঁজ। ওই পলাতক-সন্দেহে কৃষ্ণনগরের বৌবাজার এলাকার বাসিন্দা এক যুবককে ধরা হয় রাখা হয় কল্যাণী কোভিড হাসপাতালে। কিন্তু তাঁকে ও তাঁর আত্মীয়দের জেরা করে পুলিশ বৃহস্পতিবারই বুঝতে পারে, কিছু একটা ভুল হয়েছে। পলাতক করোনা রোগী অন্য কেউ। শুক্রবার ধৃত যুবকের রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরে তাঁদের অনুমান সত্যে পরিণত হয়। এখন অনেকেই বলছেন, শুধু নাম এক হওয়ার কারণে কাউকে রাস্তা থেকে ধরে সোজা কোভিড হাসপাতালে ঢোকানোটা মোটেই ঠিক হয়নি। আরও ভাল করে খোঁজখবর করা দরকার ছিল।

এর পাশাপাশি জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েই যাচ্ছে। কোন রোগীকে জেলার বলে ধরা হবে আর কোন রোগীকে নয়, তা স্থির করে উঠতে পারছেন না স্বাস্থ্যকর্তারা। বৃহস্পতিবার জেলার স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রকাশিত করোনা আক্রান্তের তালিকা দেখে অন্তত এমনটাই মনে করছেন অনেকেই।

এই তালিকা থেকে রাতারাতি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে নাকাশিপাড়ার রাজাপুরের বাসিন্দা কলকাতা পুলিশের সাব ইন্সপেক্টরের নাম নাম। কারণ হিসাবে জেলার উপ মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক-২ অসীত দেওয়ান জানিয়েছেন, যেহেতু ওই ব্যক্তি কলকাতায় কর্মসূত্রে থাকতেন এবং সেখানেই আক্রান্ত হয়েছেন তাই নদিয়া জেলার তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

এর আগেও চাকদহ ও করিমপুরের দুই করোনা আক্রান্তের নাম জেলার তালিকা থেকে দীর্ঘ দিন বাদ রাখার পর হঠাৎ করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। চাকদহের আক্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন কলকাতার আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের ল্যাব টেকনিশিয়ান। সেখান কর্তব্যরত অবস্থায় তিনি সংক্রমিত হন ও সেখানেই চিকিৎসা হয়। একই ভাবে করিমপুরের বাসিন্দা ওই একই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সংক্রমিত হয়েছিলেন। তাঁরা দু’জনই যেহেতু নদিয়ার বাইরে সংক্রমিত হয়েছেন ও চিকিৎসা করা হয়েছে তাই তাঁদের নাম প্রথমে নদিয়ার তালিকায় ছিল না। পরে তাঁদের নাম নথিভূক্ত করা হয় এবং নদিয়ার কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কাঁচড়াপাড়ার বাসিন্দা এক মহিলার নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। যুক্তি দেখানো হয়, ওই মহিলা নদিয়ার বাসিন্দা নন। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, তা হলে চাপড়ার গাঁটরার সংক্রমিত ব্যক্তির নাম তালিকায় থাকবে কেন? তিনিও তো কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 Coronavirus Coronavirus in West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE