Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Lockdown

করোনার ভয়ে স্থগিত নবদ্বীপের ঐতিহ্যবাহী চন্দনযাত্রা

এবারই প্রথম বিগ্রহ নামছেন না পথে, যাবেন গঙ্গায় নৌকাবিহারে।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২০ ০৫:৫৬
Share: Save:

এমন ব্যতিক্রম এই প্রথম। শতবর্ষের ইতিহাসে নজিরবিহীন। করোনাভাইরাসের ভয়ে স্থগিত হয়ে গেল নবদ্বীপের ঐতিহ্যবাহী উৎসব চন্দনযাত্রা।

প্রতি বছর এই সময় নবদ্বীপের রাধারমণ বাগ সমাজবাড়ি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হত চন্দনযাত্রা। মাধবেন্দ্রপুরী প্রবর্তিত চন্দনযাত্রা এক আশ্চর্য উৎসব, যেখানে কোনও মন্ত্র নেই। পুজোপাঠের চেনা প্রকরণ অনুপস্থিত। সুর আর সুগন্ধে ভরা এমন এক উৎসব এই চন্দনযাত্রা, যা প্রখর গ্রীষ্মে ভক্ত এবং ভগবান উভয়েরই শরীর-মন শীতল করে। ভেষজশাস্ত্র এবং সঙ্গীতশাস্ত্রের অননুকরণীয় মেলবন্ধন ঘটেছে এই উৎসবে। তীব্র গরমে শরীর ঠান্ডা করতে চন্দনের প্রলেপ দেওয়ার রেওয়াজ সেকাল থেকে এ কাল একই ভাবে জনপ্রিয়। গরমের সন্ধ্যায় কষ্টিপাথরের বিগ্রহের গায়ে পুরু করে চন্দনের প্রলেপ দিয়ে নদীতে গভীর রাত পর্যন্ত নৌকাবিহার। আর এই পুরো পর্ব জুড়ে থাকে কীর্তন। সংক্ষেপে এই হল চন্দনযাত্রা।

পুরীর জগন্নাথদেবের চন্দনযাত্রা দেখে আকৃষ্ট হয়ে রাধারমণ চরণদাস বাবাজি নবদ্বীপের সমাজবাড়িতে এই উৎসবের সূচনা করেন। তবে চন্দনযাত্রাকে পুনরুজ্জীবিত করেন চৈতন্যদেব। তাঁর হাতেই বৃন্দাবন এবং পুরীতে এই উৎসব নতুন করে প্রাণ পায়। নবদ্বীপে উৎসব চলে তিন দিন ধরে। দিনের হিসাবে ছোট হলেও, নবদ্বীপের উৎসবে আলাদা মাত্রা দেয় কীর্তন। এই তিনদিন সন্ধ্যা নামতেই নবদ্বীপের সমাজবাড়ির শতাব্দী প্রাচীন রাধারমণ বিগ্রহ সুসজ্জিত সিংহাসনে নগর পরিক্রমায় বার হয়। ফুলে ফুলে সাজানো শোভাযাত্রা গ্যাসের আলো, গোলাপ জল, আতর আর হারিয়ে যেতে বসা কীর্তনের সুরে সময় যেন এক শতাব্দী পিছিয়ে যায়। রাত বাড়লে শোভা যাত্রা চলে যায় গঙ্গার ঘাটে। সেখানে নৌকার উপরে সারারাত চলে কীর্তন। সেবাইতরা সকলে সালংকারা রমণী বেশে এই উৎসবে যোগ দেন।

কিন্তু এবারই প্রথম এই সব কিছুই হচ্ছে না। বিগ্রহ নামছেন না পথে, যাবেন গঙ্গায় নৌকাবিহারে। মন্দিরের তরফে ঠাকুরদাস বাবাজি বলেন, “মন্দিরের মধ্যে নিয়ম রক্ষার মতো করে চন্দনযাত্রা পালন করা হচ্ছে। পুজোপাঠ কীর্তন সবই মন্দিরের ভিতরে যারা আছি তাঁরাই করছি। বাকি ভক্তরা এ বার বঞ্চিত থাকলেন।”

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE