Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

তেহট্ট ফেরত শ্রমিকদের দূরে থাকতে বলছে গ্রাম

করোনাভাইরাস থাবা বসিয়েছে পড়শি তেহট্টের বার্নিয়ায়। এমনিতেই ভৈরব নদ বা জলঙ্গী নদী পেরিয়ে কখন যে মুর্শিদাবাদেও করোনাভাইরাস ঢুকবে, তা নিয়েই ছিল আতঙ্ক।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

মফিদুল ইসলাম
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২০ ০৩:৪৪
Share: Save:

ভিন্ রাজ্য ফেরত শ্রমিকেরা যেমন কোথাও কোথাও কোনও বাধা নিষেধ মানছেন না, তেমনই কোথাও সারা গ্রামই এক রকম এককাট্টা হয়ে রয়েছেন, যাতে করোনাভাইরাস না ছড়ায়। পাশের জেলা নদিয়ার তেহট্টের চার শ্রমিক ঘরে ফিরতেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে হরিহরপাড়ার সুন্দলপুর গ্রামে। সুন্দলপুর এবং পার্শ্ববর্তী স্বরূপপুর, রেজলাপাড়া, তরতিপুর গ্রামের আনাচে-কানাচেতে এখন শুরু হয়েছে ফিসফাস।

করোনাভাইরাস থাবা বসিয়েছে পড়শি তেহট্টের বার্নিয়ায়। এমনিতেই ভৈরব নদ বা জলঙ্গী নদী পেরিয়ে কখন যে মুর্শিদাবাদেও করোনাভাইরাস ঢুকবে, তা নিয়েই ছিল আতঙ্ক। আর এরই মাঝে আতঙ্ক আরও বেশি তাড়া করছে হরিহরপাড়ার সুন্দলপুর ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দাদের। সুন্দলপুরের বাসিন্দা হায়দার আলি বলেন, ‘‘ভাইরাস থেকে বাঁচতে দূরত্ব রাখতে হবে বলে সকলেই বলছেন। আমরা তাই খুব আতঙ্কে আছি।’’

গ্রামের এক মহিলা বলেন, ‘‘চারিদিকে এই ভাইরাস নিয়ে হইচই চলছে। আর ক’টা দিন পরে গ্রামে আসলেই বা ওঁদের কী ক্ষতি হত?’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে সুন্দলপুর গ্রামের জনা আটেক শ্রমিক তেহট্টের বার্নিয়া এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। লকডাউন উপেক্ষা করেই রবিবার সকালে সেই চার জন শ্রমিক সুন্দলপুর গ্রামের বাড়িতে ফিরেছেন। আর এতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গ্রামের বাসিন্দারা। তার আগে পর্যন্ত লকডাউন উপেক্ষা করে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ রাস্তায় বেরিয়ে নিত্যনৈমিত্তিক কাজ করছিলেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস আক্রান্ত এলাকা থেকে চার জন গ্রামে এসেছেন শুনে কার্যত সিঁটিয়ে রয়েছে গোটা গ্রাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের এক বাসিন্দা এবং তাঁর দুই ছেলে বিগত কয়েক মাস ধরে তেহট্টের বার্নিয়া এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। এলাকার আরও কয়েক জন শ্রমিক তাঁদের সঙ্গেই রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। তেহট্টে একই পরিবারে পাঁচ সদস্যের দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়তেই লকডাউন উপেক্ষা করে রবিবার সকালে ঘরে ফিরেছেন ওই চার জনই। তার পরেই গ্রামের চেহারা বদলে গিয়েছে।

ইতিমধ্যে গ্রামের বাসিন্দাদের তরফে ওই চার জনের পরিবারকে সতর্ক করা হয়েছে। স্থানীয় ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সেলিম মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা শ্রমিকদের পরিবারগুলিকে সচেতন করেছি। গ্রামের অন্য বাসিন্দাদেরও সচেতন করেছি।’’ শ্রমিকেরা ঘরে পৌঁছোনোর খবর পৌঁছেছে ব্লক প্রশাসনের কাছে। স্থানীয় বিডিও পূর্ণেন্দু স্যানাল বলেন, ‘‘আগামী দু’সপ্তাহ যাতে তাঁদের ঘরের বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পরিবারের লোকজনকেও বলা হয়েছে তাঁদের সঙ্গে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে।’’ জ্বর, গলাব্যথা সহ অন্য উপসর্গ দেখা দিলে হাসপাতালে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ড.আজিজুল লস্কর বলেন, ‘‘আমরা শ্রমিক ও তার পরিবারের লোকেদের উপর নজর রাখছি।’’

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE