দিব্যি বেঁচে রয়েছেন। অথচ শ্রম দফতরের খাতায় তিনি মৃত। ওই নির্মাণ শ্রমিককে মৃত হিসাবে দেখিয়েই শ্রম দফতর থেকে তোলা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। নাকাশিপাড়ার ঘটনা।
নিয়ম অনুযায়ী, কোনও নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হলে শ্রম দফতর থেকে তাঁর পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও ওই টাকা দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বপনকুমার খাঁ নামে ওই শ্রমিক জীবিত থাকা সত্ত্বেও তাঁকে মৃত হিসাবে দেখিয়ে টাকা তোলা হয়েছে। যদিও সেই টাকার নামমাত্র স্বপনকে দিয়ে বাকি টাকা এলাকারই এক সিটু সমর্থক নিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। শ্রম দফতরের একাংশের ধারণা, এই দুর্নীতির পিছনে কোনও চক্র রয়েছে। তবে টাকা স্বপনের অ্যাকাউন্টেই পাঠিয়ে অভিযুক্তেরা ‘কাঁচা কাজ’ করে ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
শ্রম দফতরের এক আধিকারিক জানান, দফতর ভুল করে ওই টাকা অ্যাকাউন্টে দেয়নি। তিনি বলেন, ‘‘স্বপন মারা গিয়েছেন, এই মর্মে তাঁর পরিবারের কেউ বা কোনও ইউনিয়ন নেতা দফতরে জানান। সেই মতো তাঁর কাগজপত্র তৈরি হয়। এর পরে দফতর ওই টাকা দেয়। এর মধ্যে একটা দুর্নীতি হয়েছে।’’ পাশাপাশি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এটা কোনও ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। গত কয়েক মাসে এ রকম ঘটনা আরও ঘটেছে। যা নিয়ে শ্রম দফতরের অন্দরে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন এক পরিদর্শক।
নাকাশিপাড়ার গাছার বাসিন্দা স্বপন আট বছর আগে নির্মাণ শ্রমিকের কার্ড করিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি তখন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের নেতা গুরুপদ বিশ্বাসের মাধ্যমে ওই কার্ড করি। তার পরে এখন তো দেখি আমার কার্ড বাতিল হয়ে গিয়েছে।’’ কিন্তু কোথা থেকে তিনি জানলেন তাঁর কার্ড বাতিল হয়ে গিয়েছে, সে বিষয়ে অবশ্য তিনি কিছু বলতে চাননি। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫০ হাজার টাকা পাঠানোর বিষয়ে স্বপন বলেন, ‘‘মাস খানেক আগে এলাকার বাসিন্দা সিটু সমর্থক বিমল ব্যাপারি আমাকে জানান, আমার অ্যাকাউন্টে ৫০ হাজার টাকা ঢুকেছে। এটা শ্রম দফতর দিয়েছে। এর পরে আমাকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে বিমল চাপ দিয়ে বাকি টাকাটা নিয়ে নেয়।’’ পাশাপাশি তাঁর দাবি, তাঁকে যে মৃত হিসাবে দেখিয়ে টাকা তোলা হয়েছে তা তিনি জানতেন না। নিয়ম অনুযায়ী, কেউ মারা গেলে তাঁর নমিনির অ্যাকাউন্টে টাকা যাওয়ার কথা। এ ক্ষেত্রে স্বপনকে মৃত দেখানোর পরে তাঁর অ্যাকাউন্টেই টাকা ঢুকেছে। এক পরিদর্শক বলেন, ‘‘আসলে যে জালিয়াতি করেছে, সে তাড়াহুড়ো করে এই কাঁচা কাজ করে ফেলেছে।’’ বিমল অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তিনি বলেন, ‘‘আমি সে ভাবে সিটু করি না। স্বপনকে আমি ভাল করে চিনি। তাঁর বাড়ি আমার এলাকায়। কিন্তু তাঁর অ্যাকাউন্টে কত টাকা ঢুকেছে, কেন ঢুকেছে, সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’’ কৃষ্ণনগরের সহকারী শ্রম কমিশনার চন্দন বণিক বলেন, ‘‘অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy