Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কম বয়সে বিয়ে মানতে পারেনি পরিবার, আত্মঘাতী নবদম্পতি

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, একটি শাড়িরই দুই প্রান্ত জড়ানো ছিল স্বামী ও স্ত্রীয়ের গলায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম সুজিত রায় ও প্রিয়া রায়। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, ওই দম্পতি গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে।

ময়না-তদন্তে নিয়ে যাওয়ার আগে যুগলের দেহ। নিজস্ব চিত্র

ময়না-তদন্তে নিয়ে যাওয়ার আগে যুগলের দেহ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাঁসখালি শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৮
Share: Save:

স্বামীর বয়স ২২, স্ত্রীয়ের ১৮। কম বয়সে বিয়ে করায় সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন বাড়ির লোকেরা। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামের আম বাগানে গাছের ডাল থেকে উদ্ধার হল ওই দম্পতির ঝুলন্ত মৃতদেহ। হাঁসখালি থানার ভবানীপুর এলাকায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, একটি শাড়িরই দুই প্রান্ত জড়ানো ছিল স্বামী ও স্ত্রীয়ের গলায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম সুজিত রায় ও প্রিয়া রায়। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, ওই দম্পতি গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজিত কলকাতায় রাজমিস্ত্রির কাজ করত। বছর দেড়েক আগে তার সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয় উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর ভবানীপুর এলাকার বাসিন্দা প্রিয়ার। সেখান থেকেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। মাস সাতেক আগে প্রিয়া এক দিন চলে আসে সুজিতের বাড়িতে। কাউকে কিছু না জানিয়ে তারা বিয়েও করে নেয়।

দুজনেরই পরিবার এই বিয়ে মানতে পারেনি। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রিয়ার বাড়ির লোকজন তাকে নিতেও এসেছিল। কিন্তু সে ফিরে যায়নি। বাপের বাড়ির সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরই মধ্যে সুজিতের বাবাও তাকে আলাদা করে দেয়। বাড়িতে থাকতে দিলেও আলাদা করে দেওয়ার পরে যেন অথৈ জলে পড়ে যায় নবদম্পতি। এর মধ্যে প্রিয়া অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। কিন্তু সুজিত আর কলকাতায় কাজে ফিরে না যাওয়ায় সংসারে অভাব দেখা দেয়।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, একে অল্প বয়স, তার উপর অভাবের কারণে তাদের মধ্যে হতাশা চলে আসে। সুজিতের বাবা অমল রায় বলেন, “আমি চাইনি যে এত অল্প বসয়ে ওরা বিয়ে করুক। চেয়েছিলাম ছেলেটা নিজের পায়ে দাঁড়াক। তারপর বিয়ে করে সংসারি হোক। তাই মানতে পারিনি।” সেই কারণে যে তিনি ছেলে আর ছেলের বউকে আলাদা করে দিয়েছিলেন তা-ও পুলিশের কাছে স্বীকার করে নিয়েছেন।

এই অবস্থায় দিন সাতেক আগে সুজিত ও প্রিয়া বাড়ি থেকে জামাকাপড় নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। সকলে ভেবেছিলেন, তাঁরা বেড়াতে গিয়েছেন। সেই জন্য বিশেষ খোঁজখবরও নেননি। এ দিন সকালে গ্রামবাসীরা দেখতে পান, বাগানের ভিতরে ঝুলছে ওই দম্পতির দেহ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, বাইরে চলে গেলেও তাঁরা কাজ পাননি। তাই হতাশ হয়ে তাঁরা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Couple Suicide Hanskhali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE