Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গরু-পাচারকারীদের মুখোমুখি, গুলিবিদ্ধ কনস্টেবল

শীত পড়তেই সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় ফের শুরু হয়েছে গরু পাচার। সেই তালিকায় প্রথম দিকেই ছিল সুতির বিভিন্ন গ্রামের নাম।

গুলিবিদ্ধ কনস্টেবল। —নিজস্ব চিত্র

গুলিবিদ্ধ কনস্টেবল। —নিজস্ব চিত্র

বিমান হাজরা
সুতি শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৩৫
Share: Save:

দু’ দল গরু পাচারকারীর সঙ্গে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হলেন এক পুলিশ কর্মী। সুতির সরলা গ্রামে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ ওই ঘটনার পরে এলাকায় পুলিশি টহল শুরু হয়েছে। চলেছে ধড়পাকড়ও। রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের গুলিবিদ্ধ ওই কনস্টেবল শুভাশিস চট্টোপাধ্যাকে এ দিন সকালে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ ৬ জন গরু পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে আটক করা হয়েছে অন্তত ১৬টি গরু।

শীত পড়তেই সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় ফের শুরু হয়েছে গরু পাচার। সেই তালিকায় প্রথম দিকেই ছিল সুতির বিভিন্ন গ্রামের নাম। সেই ট্রাডিশন যে সমানে চলছে, গত এক মাসে সুতির বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় শ’খানেক গরু এবং জনা দশেক পাচারকারী গ্রেফতার সে কথাই মনে পড়িয়ে দিচ্ছে। বিএসএফের দাবি, ধৃতদের অধিকাংশই বাংলাদেশি। গরু পাচারের অন্যতম প্রধান রুট সরলা গ্রামের মাঠ এবং রাস্তা। এই পথ ধরে অতি সহজেই সুতির চাঁদের মোড় ও আহিরণ সেতু দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছে যাওয়া যায়। স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, এ দিন এক দল পাচারকারী সরলা গ্রামের পথেই এক পাল গরু নিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে। সেই সময়ে পাচারকারীদের অন্য একটি দল তাদের বাধা দেয়। বচসা হাতাহাতিতে গড়ায়। গোলমাল ছড়াতে থাকে। হই হট্টগোল শুনলেও গ্রামবাসীরা ঘরে কুলুপ এঁটে ছিলেন। তবে খবর পৌঁছে গিয়েছিল সুতি থানায়।

আধ ঘণ্টার মধ্যেই ঘটনাস্থলে গাড়ি নিয়ে পৌঁছয় সুতি থানার সশস্ত্র পুলিশ কর্মীরা। পাচারকারীরা তখন পুলিশকে লক্ষ্ করে ইট পাথর ছুড়তে থাকে। পুলিশ তাদের লাঠি নিয়ে তাড়া করে। ঘটনাস্থলেই পুলিশের হাতে আটক হয় ১৬টি গরু। পুলিশের তাড়া খেয়ে মাঠ দিয়ে পালাতে শুরু করে পাচারকারীরা। তাদের মধ্যে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় ৬ জন পাচারকারী। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশের কাছ থেকে আটক গরু ও ধৃত পাচারকারীদের ছিনিয়ে নিতে এরপরই শুরু হয় গুলির লড়াই। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও।

তখনই পাচারকারীদের দিক থেকে গুলি ছিটকে এসে ওই পুলিশ কর্মীরের গায়ে লাগে। তবে ওই ঘটনায় কোনও পাচারকারী আহত হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। পুলিশর দাবি অন্তত কুড়ি রাউন্ড গুলি চলে। জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সংঘর্ষের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘পাচারকারীদের ছোঁড়া বন্দুকের ছররা গুলিতে আহত পুলিশ কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। একদল পাচারকারী শেষ রাতের দিকে সরলা গ্রামের পাশ দিয়ে গরু নিয়ে সীমান্তের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের প্রতিরোধ করে। তখনই গুলি চালায় তারা।’’

পাচারকারীদের গুলির লড়াই নতুন নয়। গ্রামের মানুষ জানান, এমন ‘লড়াই’ বাধলে ঘরে সেঁদিয়ে যাওয়াই অভ্যাস। তবে পুলিশেকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ার তেমন নজির নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE