Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus Lockdown

মাঝরাতে ঘূর্ণি নাচন ঝড়ের, পাঁচিল ভেঙে, গাছ পড়ে মৃত ৭

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

হবিবপুরে আমপান ঝড়ে নষ্ট হয়েছে কলাগাছ। বৃহস্পতিবার। ছবি: প্রণব দেবনাথ

হবিবপুরে আমপান ঝড়ে নষ্ট হয়েছে কলাগাছ। বৃহস্পতিবার। ছবি: প্রণব দেবনাথ

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২০ ০৩:২৩
Share: Save:

ঝোড়ো হাওয়া শুরু হয়েছিল বুধবার সাড়ে সাতটার পর থেকে। সঙ্গে বৃষ্টি কলকাতা তোলপাড় হওয়ার খবর তত ক্ষণে পেয়ে গিয়েছেন নদিয়ার লোক এবং প্রমাদ গণতে শুরু করেছেন। আমপানের বাংলাদেশ যাওয়ার কথা ছিল নদিয়া-মুর্শিদাবাদের উপর দিয়েই। তীব্রতা একই থাকলে জেলাকেও মারাত্মক ক্ষতির বোঝা বইতে হবে এবং বাড়ি-ঘর-ফসল তছনছ হয়ে যাবে এমন আশঙ্কা শুরু হয়েছিল।

ঝড় এল। বুধবার রাত সাড়ে এগারোটা থেকে প্রায় সোওয়া দু’টো পর্যন্ত চলল তার তাণ্ডব। গতি কলকাতার তুলনায় কিছুটা কম (ঘণ্টায় ৮০-৮৫ কিলোমিটারের মতো) থাকলেও চলে গিয়েছে ৭টি প্রাণ। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ, বহু জায়গায় এখনও ভেঙে পড়া গাছ, পাঁচিল বা বাড়ির ধ্বংসাবশেষ সরানো যায়নি। তার নীচে চাপা পড়ে থাকতে পারেন অনেকে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে ১ জন কৃষ্ণনগরের, ১ জন কল্যাণীর, ৪ জন চাকদহের ও ১ জন রানাঘাটের গাংনাপুরের বাসিন্দা।

মৃতদের মধ্যে ঘেঁটুগাছির বাসিন্দা অরুণ বিশ্বাস(৫৫) এবং কদম্বগাছির বাসিন্দা রতন সরকার (৭১) গাছ চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন। কোতোয়ালি থানার সন্ধ্যা রামনগর পাড়ায় পাঁচিল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে নরেন্দ্র নন্দী (৭১) নামে এক বৃদ্ধের। বাকি চার জনের নাম এখনও জানা যায়নি। আহতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ৬১। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার জাফর আজমল কিদওয়াই বলেন, “ঝড়ের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতির সার্বিক হিসাব এখনও করা সম্ভব হয়নি। তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি হতে এখনও দু-এক দিন লাগবে।”

সম্পত্তি ও ফসলের অসম্ভব ক্ষতি করেছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। জেলার ৭ লক্ষ ১ হাজার ৪৭৯ জন তার ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গুঁড়িয়ে গিয়েছে ১৫৮৩৫টি বাড়ি। আংশিক ভাঙা বাড়ির সংখ্যা২০৯৮২। প্রচুর হাঁস-মুরগির মৃত্যু হয়েছে। ঝড় আসার আগে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল ৩৩৬১ জনকে। ঝড়ের পরেও আরও প্রায় সাড়ে তিন হাজার জনকে ৪৩টি উদ্ধারশিবিরে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় উপড়ে গিয়েছে গাছপালা। বুধবার গোটা দিনে মোট ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে নদিয়ায়।

কল্যাণী, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, চাকদহ-সহ জেলার বিভিন্ন শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে গাছ ভেঙে। চরজাজিরা অঞ্চলে একটি রাস্তা ঝড়ের দাপটে বেশ কয়েকমিটার ভেঙে গিয়েছে। ফলে সেখানে সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। জেলা জুড়ে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত চলেছে লোডশেডিং। বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট পরিষেবা। মোবাইল ফোনে চার্জ দিতে না-পেরে অনেকেই ফোন বন্ধ করে রাখতে বাধ্য হন। শান্তিপুর- বীরনগর-সহ অনেক জায়গায় খাবার জলের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Cyclone Amphan Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE