Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

মুখাগ্নি হল না পার্থের

এত বড় ঘটনার পরেও পার্থ চক্রবর্তীর ব্যাঙ্ক থেকে কেউ না-আসায় ফুঁসছেন বাড়ির লোক। শুক্রবার বিকালে চাকদহের গৌরপাড়ার বাড়িতে বসে পার্থ-র বাবা বছর সত্তরের পঙ্কজ চক্রবর্তী বলেন, “এত বড় সর্বনাশ হয়ে গেল আমাদের, কর্মরত অবস্থায় আমার ছেলে খুন হল। অথচ, ব্যাঙ্কের কেউ এক বারের জন্যও বাড়িতে এল না। এমনকি, ব্যাঙ্ক থেকে ওর সহকর্মীদের কেউ ফোন করে জানতে চাইলেন না আমরা কি করছি।”

শোকার্ত বাবা। নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত বাবা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫০
Share: Save:

ছেলেকে শেষ দেখা দেখতে পারলেন না পরিবারের লোকেরা। আততায়ীরা টুকরো-টুকরো করে কেটেছিল তাঁর দেহ। মুণ্ডটি এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে মুখাগ্নিও করা যায়নি। ময়না তদন্তের পর হাওড়ার শিবপুর ঘাটে শবদেহ দাহ করা হয়েছে। বাড়িতে দেহাংশ আনাই হয়নি।

এত বড় ঘটনার পরেও পার্থ চক্রবর্তীর ব্যাঙ্ক থেকে কেউ না-আসায় ফুঁসছেন বাড়ির লোক। শুক্রবার বিকালে চাকদহের গৌরপাড়ার বাড়িতে বসে পার্থ-র বাবা বছর সত্তরের পঙ্কজ চক্রবর্তী বলেন, “এত বড় সর্বনাশ হয়ে গেল আমাদের, কর্মরত অবস্থায় আমার ছেলে খুন হল। অথচ, ব্যাঙ্কের কেউ এক বারের জন্যও বাড়িতে এল না। এমনকি, ব্যাঙ্ক থেকে ওর সহকর্মীদের কেউ ফোন করে জানতে চাইলেন না আমরা কি করছি।” তিনি বলেন, “আমাদের অনুমান, পার্থ-র খুনের ঘটনায় সেখানকার কর্মীদের কেউ কেউ যুক্ত রয়েছেন। এক জনের কথা শুনেছিলাম, যাঁর সঙ্গে আমার ছেলের সম্পর্ক ভাল ছিল না। তিনি আমার ছেলেকে সহ্য করতে পারতেন না। আশা করছি, পুলিশ তদন্ত করলে সব সামনে আসবে। খুনির চরম শাস্তি দাবি করছি।”

বুধবার দুপুরের পর থেকে পার্থর খোঁজ মিলছিল না। রাত আটটা নাগাদ হাওড়ার ডোমজুড়ে বস্তায় বাঁধা দেবাংশ উদ্ধার হয়। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে পরিবারের লোকেরা সেখানে পৌঁছে যান। খবর পেয়ে পার্থ-র বাবা-সহ অনান্যরা সেখানে যান। দেহের গঠন এবং অন্তর্বাস দেখে তাঁকে চিহ্নিত করে পরিবারের লোকেরা। পরদিন বিকালে হাওড়ার মল্লিক ফটক মর্গে ময়নাতদন্ত করা হয়। সেখান থেকে দাহ করে রাতে বাড়ি ফিরেছেন বাড়ির লোকেরা। ব্যাঙ্কের মাত্র এক জন কর্মী তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।

চাকদহ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের গৌরপাড়া এলাকায় বাড়ি বছর সাতাশের পার্থ চক্রবর্তীর। বাবা পঙ্কজ চক্রবর্তী জীবনবিমার এজেন্ট। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর পার্থ কাজ পেয়ে যায়। সম্প্রতি তাঁর পদন্নোতিও হয়েছে। দিদি গায়ত্রী রায় বলেন, “দিন দশেক আগে ভাই আমাকে জানিয়েছিল, সে যখন ব্যাঙ্কে যায়, সেই সময় কেউ ওকে অনুসরণ করে।” পার্থর কাকা মুকুন্দ চক্রবর্তী বলেন, “আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে খুনিদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।” তিনি বলেন, “গরিব পরিবারের কিছু ছেলে ওই সব ব্যাঙ্কে কাজ করছে। লক্ষ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে সাইকেলে করে নিয়ে আসছে। কিন্তু, তাদের কোনও নিরাপত্তা নেই। পার্থ একটি মোটরসাইকেল কিনেছিল। ব্যাঙ্কে জায়গা না থাকায় সেটা বাড়িতেই রয়ে গিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Bank Worker Funeral
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE