Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কান কেটে, বোতলে ফুঁড়ে খুন

দেহের অবস্থা দেখে পুলিশের অনুমান, অসম্ভব রাগ বা আক্রোশে নৃশংস ভাবে হামলা চালানো হয়েছে এবং সম্ভবত মৃতের সঙ্গে হামলাকারীর পুরনো সম্পর্ক ছিল।

ম়ৃত যুবকের দেহ। নিজস্ব চিত্র

ম়ৃত যুবকের দেহ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৮ ০৮:০০
Share: Save:

সকালবেলা রাস্তার ধারে রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখে শিউরে উঠেছিলেন পথচলতি মানুষ।

মুখের ভিতর মাটি ঢোকানো, পেট ফুঁড়ে গেঁথে দেওয়া হয়েছে মদের বোতল! এখানেই শেষ না। ধারাল কোনও অস্ত্র দিয়ে মৃত যুবকের ডান কান কেটে নেওয়া হয়েছে। তাঁর পরনের জামাটি গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মিলেছে। দেহের অবস্থা দেখে পুলিশের অনুমান, অসম্ভব রাগ বা আক্রোশে নৃশংস ভাবে হামলা চালানো হয়েছে এবং সম্ভবত মৃতের সঙ্গে হামলাকারীর পুরনো সম্পর্ক ছিল। হামলাকারী এতটাই ক্ষিপ্ত ছিল যে সবরকম ভাবে সে ওই যুবকের মৃত্যু নিশ্চিত করতে চেয়েছে। সেই জন্য মুখে মাটি ঢুকিয়ে শ্বাসরোধ করে আবার গলায় জামার ফাঁস দিয়েছে। এবং পেটে বোতল ঢুকিয়েছে।

মৃত যুবকের নাম সুদীপ মাইতি(২৩)। তাঁর বাড়ি কৃষ্ণনগরের গোলাপট্টি এলাকায়। সেখান থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে গোদাডাঙা থেকে যে রাস্তা কালিনগরের দিকে চলে গিয়েছে তার এক পাশে কদমবাগানে বৃহস্পতিবার সকালে সুদীপের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। জেলার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “নিছক মদের ঠেকের গোলমাল নয়, পুরনো আক্রোশ থেকেই খুন মনে হচ্ছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” মহিলাঘটিত কারণও এর পিছনে থাকতে পারে বলে পুলিশ মনে করছে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রের খবর, সুদর্শন মাইতি ও জ্যোৎস্না মাইতির ছোট ছেলে সুদীপ। তাঁর বড়দা পাপ্পু বর্ধমানে একটি দোকানে কাজ করেন। সুদীপ বেশ কয়েক বছর ধরেই মাদকাশক্ত। প্রায় দু’ বছর কল্যাণীর একটি নেশা ছাড়ানোর কেন্দ্রে ভর্তি ছিলেন। মাস পাঁচেক আগে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। তার পর আবার মদ, গাঁজা, হেরোইনের নেশা শুরু করেছিলেন। সুদীপের বাবা সুদর্শন মাইতিও কয়েক বছর আগে রহস্যজনক ভাবে খুন হন। বাড়ি থেকে কিছু দূরে নলকূপের লোহার হাতল দিয়ে তাঁর মাথায় মেরে কে বা কারা খুন করেন। সেই খুনেরও কিনারা হয়নি। অনেক দিন থেকেই তাঁদের পরিবারে নানা কারণে অশান্তি চলছিল।

বুধবার রাতে সুদীপ খাওয়াদাওয়া করে শুইয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ তিনি উঠে ঘর থেকে বের হন। আর ফেরেননি। এ দিন তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ছেলের মৃত্যুর খবর জানার পর থেকেই বার-বার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন জ্যোৎস্নাদেবী। কাঁদতে-কাঁদতেই বলেন, “আমার ছেলে নেশা করত। কিন্তু কোনও অন্যায়-অপরাধের সঙ্গে জড়িয়েছে এমন শুনিনি। তেমন কোনও শত্রুও ছিল না। তা হলে কেন কেউ এই ভাবে তাকে খুন করল!’’ পুলিশ সুদীপের বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Youth Dead body
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE