ধর্নামঞ্চ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
দিল্লির কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে কালীগঞ্জে দেবগ্রামের কৃষক ধর্না মঞ্চ বুধবার ৩০ দিনে পা দিল। সেই উপলক্ষে ধর্না মঞ্চের পক্ষ থেকে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে নতুন তিন কৃষি আইন স্থগিত হয়ে যাওয়ায় চাষিদের মনোবল বেড়েছে। তবে আইনে স্থগিতাদেশ নয়, আইন বাতিল করতে হবে বলেও এ দিন মঞ্চ থেকে জোরালো দাবি ওঠে।
গত ১৫ ডিসেম্বর দেবগ্রামের পুরনো বাসস্ট্যান্ডের কাছে এলাকার বেশ কিছু কৃষক ও স্থানীয় মানুষ ‘কৃষক সংহতি ধর্না মঞ্চ’ নামে এই ধর্নার সূচনা করেন। প্রত্যক্ষ ভাবে কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় না থাকায় শুরু থেকেই এলাকার কৃষক ও অনেক সাধারণ মানুষ ওই মঞ্চে সমবেত হন।
ধর্না মঞ্চের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, দিল্লির কৃষক আন্দোলনের মতো সারা রাত তাঁরা এই মঞ্চে থাকছেন না। রুজির সংস্থান না করেও আন্দোলন বেশি দিন টিঁকিয়ে রাখা যাবে না। আর বেশির ভাগ মানুষের সংসার রয়েছে। তাই রোজ সকালে বেশ কয়েক জন চলে আসছে মঞ্চ পরিচালনা করার জন্য। চাষিরা মাঠে খেটে বিকাল হতেই পৌঁছে যাচ্ছেন ধর্না মঞ্চে। তবে শুধু এলাকার চাষিরা নন, পড়শি ব্লক থেকেও চাষিরা আসছেন আন্দোলনে যোগ দিতে। এ ছাড়াও অনেক কৃষক পরিবারের মহিলারা যেমন আসছেন, তেমন মাঝে-মধ্যে শিশু-কিশোরদেরও দেখা যাচ্ছে ওই ধর্না মঞ্চে।
বাঁশের তৈরি অস্থায়ী মঞ্চের সামনে সার দিয়ে চেয়ার পাতা। প্রতি দিনই বক্তারা এসে কৃষি বিলের সমস্যা নিয়ে চাষিদের বোঝাচ্ছেন। তবে কোনও রাজনৈতিক নেতা নয়, মূলত স্কুলশিক্ষক ও নানা কৃষিবিদ আসছেন।
বছরখানেক আগেই কালীগঞ্জের পলাশিতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য এমন এনআরসি বিরোধী ধর্না মঞ্চ হয়েছিল। তবে কোভিডের কারণে শেষ পর্যন্ত তা গুটিয়ে নিতে হয়। সেই আন্দোলনের শুরু থেকেই উপস্থিত ছিলেন ও বেশ কিছু দায়িত্বে ছিলেন, এমন অনেকেই রয়েছে এ বারের ধর্নাতেও। তবে সে বারের মতো সর্বাত্মক অংশগ্রহণ এ বার এখনও নেই। অনেকের মতেই, এনআরসি নিয়ে সকলের, বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের ভয় মানুষকে বেশি টেনেছিল। সেখানে এই আন্দোলন মূলত চাষিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। যদিও কর্মকর্তাদের মতে, এই কেন্দ্রীয় কৃষি আইন জারি থাকলে পরোক্ষে সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই সকলেরই ধর্নায় শামিল হওয়া উচিত।
দু’বারের ধর্নার সঙ্গেই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে যুক্ত কামালউদ্দিন শেখ বলেন, “এনআরসি-র ব্যাপারে মানুষ হঠাৎ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। এই কৃষি আইনের বিষয়টি এখনও সকলে বুঝে উঠতে পারেনি। আমাদের বিশ্বাস, প্রথমে সময় লাগলেও সাধারণ মানুষ ঠিকই আন্দোলনে যোগ দেবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy