প্রতীকী ছবি।
করোনা-ছায়ায় হাঁসফাঁস জেলায় বর্ষার মুখে দোসর হয়ে উঠবে ডেঙ্গি— এমনই আশঙ্কা ছিল স্বাস্থ্য দফতরের। কিন্তু এ যাত্রায় বৃষ্টি অন্তত স্বস্তি ফিরিয়ে দিয়েছে কর্তাদের কপালে!
গত বছর জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর যে ডেঙ্গির থাবায় আক্রান্তের পারদ ছুঁয়েছিল ৮৭০ এ বার তার সংখ্যা সাকুল্যে ৭৯।
এই অভাবিত ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ অবশ্য স্বাস্থ্য দফতরের একক সাফল্য নয়, বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অঝোর বর্ষণ ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজটা এ বার অনেক সহজ করে দিয়েছে। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বর্ষায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ যথেষ্ট হওয়ায় জমা জলে মশার ডিম পাড়ার সুযোগ কমে গিয়েছিল অনেকটাই। জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া লার্ভা রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রিত করতে সাহায্য করেছে।
মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘একাধিক কারণে এ বার ডেঙ্গির প্রকোপ কমেছে। তার একটা বড় কারণ যদি হয় মানুষের সচেতনতা এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের তৎপরতা তা হলে অন্য একটা কারণ অবশ্যই অতিবৃষ্টি।পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে জল জমতে পারেনি। মশার চাষও বন্ধ হয়েছে!’’
তিনি অবশ্য প্রথম বাহবা স্বাস্থ্য কর্মীদেরই দিতে চান— ‘‘ডেঙ্গির মতো মশাবাহিত রোগের বিষয়ে মানুষ যেমন সচেতন হয়েছ। তেমনই ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য দফতর, জেলা পরিষদ কাজ করে চলেছে। এটাও মনেরাখতে হবে।’’
দেশ জুড়ে এ বর্ষায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত ৯ শতাংশ বেশি। রাজ্যের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তিন জেলা ছাড়া সর্বত্রই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে বলেই আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সেচ দফতর সূত্রের খবর, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলায় স্বাভাবিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৩৯১ মিলিমিটার। সেখানে বছর শেষ হতে এখনও তিন মাস বাকি, এর মধ্যে জেলায় ১৬৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে জল দাঁড়িয়ে থাকার সুযোগ পায়নি। স্বাস্থ্যদফতর সূত্রের খবর জল দাঁড়ানোর সুযোগ কম পেলে মশা বংশবিস্তারের সুযোগ কম পায়। ডেঙ্গির লার্ভা তাই বংশবিস্তার করতে পারেনি।
সেই সঙ্গে করোনা আবহে আশাকর্মীরা বাড়ি ঘুরে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে লাগাতার কাজ করে গিয়েছেন বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি। ডেঙ্গির প্রকোপ কমার প্রশ্নে সেটা একটা বড় আর্শীবাদ বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy