Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Ganga Erosion

ফের আগ্রাসী গঙ্গা, ভাঙন শুরু ধানঘড়ায় 

ওই স্কুলে এখনও রয়ে গিয়েছেন নিরাশ্রয় পরিবারগুলির অনেকেই। তাঁদের কাছে এখন ছাদ খোঁজার প্রশ্ন।  জনপ্রতিনিধিরা এসে অবশ্য এদিনও আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন পুর্নবাসনের।

ধেয়ে আসছে নদী। নিজস্ব চিত্র

ধেয়ে আসছে নদী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শমসেরগঞ্জ শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২০ ০০:৫৯
Share: Save:

দিন কয়েক বিরতির পরে ফের গঙ্গা-ভাঙন শুরু হয়েছে ধানঘড়ায়। পাঁচটি গ্রাম গ্রাস করে দিন কয়েক ক্ষান্ত দেওয়ার পরে স্থানীয় বাসিন্দাদাদের আশা জেগেছিল এ বারের মতো নদী শান্ত হল!

বাস্তবে যে তা নয়, ধানঘড়ায়র পাড় নতুন করে ভাঙতে শুরু করায় তা টের পাওয়া গেল। ধানঘড়া অবশ্য মাসখানেক আগেই মানচিত্র থেকে প্রায় মুছে গিয়েছে। গ্রামের কোল ঘেঁষে বেঁচে ছিল লিচু বাগান। শুক্রবার রাত থেকে সেই লিচু বাগানে আছড়ে পড়তে শুরু করেছে নদী। প্রায় ২৫ বিঘার বিস্তৃত সেই লিচু বাগান শুক্রবার রাতেই হারিয়ে গিয়েছে।

গ্রামের অন্তত সাতটি পাড়ার মাসখানেক আগেই গঙ্গাপ্রাপ্তি হয়েছিল, এ বার লিচুবাগান এবং তার লাগোয়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দু-এক ঘর বসত তলিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায়। গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা পড়শি গ্রাম কিংবা আত্মীয় স্বজনের বাড়ি আশ্রয় নিয়েছেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং প্রশাসনের তরফে দীর্ঘ উদাসীনতার পরে শুরু হয়েছে ধানঘড়ার জন্য জমি খোঁজা। তবে সে কাজ রাতারাতি হওয়ার নয়। ভিটেহারা মানুষের অনেকেই তাই এখনও খোলা আকাশের নিচে। গ্রামের অনেকেরই আম-লিচুর বাগান ছিল। অনেকে সেখানেই বসত করার স্বপ্ন দেখছিলেন। কিন্তু, লিচু বাগানে নদী এসে পড়ায় সে স্বপ্নেও বালি পড়েছে। গ্রামের প্রাথমিক স্কুলটি শনিবারও জেগে ছিল। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ভাঙন আর ৫০ মিটার এগিয়ে এলেই তা তলিয়ে যাবে।

ওই স্কুলে এখনও রয়ে গিয়েছেন নিরাশ্রয় পরিবারগুলির অনেকেই। তাঁদের কাছে এখন ছাদ খোঁজার প্রশ্ন। জনপ্রতিনিধিরা এসে অবশ্য এদিনও আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন পুর্নবাসনের। কিন্তু তা কোথায় এবং কবে হবে তা স্পষ্ট নয়। ধানঘড়ার ফারুক শেখ, মঞ্জুর আলম, তাঞ্জিমারা খাতুন এ দিনও তাই স্কুল চত্বরে গালে হাত দিয়ে বসে রয়েছেন আছড়ে পড়া নদীর দিকে তাকিয়ে। ফারুখ বলেন, ‘‘প্রায় তিন মাস ধরে গঙ্গা ভাঙন চলছে। মুর্শিদাবাদ জেলার শমসেরগঞ্জের শিবপুর, ধানঘড়া, হিরানন্দপুর, ধুসরিপাড়া গঙ্গার গ্রাসে তলিয়ে গিয়েছে। জানি না আর কত দিন এ ভাবে ভাঙনের ভয়ে দিন কাটাব!’’ তাঞ্জিমারা বলছেন, ‘‘নেতারা আসছেন নতুন বাড়ি দেবেন বলে আশ্বাসও দিচ্ছেন। তবে কোথায়, কবে কী করে সেখানে পৌঁছব জানি না।’’ সেচ দপ্তরের অরঙ্গাবদের বাস্তুকার শ্যামল মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা আগেই বলেছিলাম জল যখন নামবে তখন আবার ভাঙনের সম্ভাবনা থাকবে, তাই হচ্ছে। বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু তা কতটা ফলপ্রসূ হবে তা স্পষ্ট নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ganga Dhanghara Murshidabad Ganga Erosion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE