Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বাজি-ফাটানোর নিয়ম মানাতে মরিয়া কর্তারা

শেষ পর্যন্ত শব্দ দানবের হাত থেকে কি রক্ষা পাবে মানুষ? না কি অন্য বারের মতো এবারেও পুলিশ-প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রীতিমতো ফাটবে নিষিদ্ধ শব্দবাজি? 

পুলিশ কি পারবে শব্দ দানবের দাপট রুখতে?

পুলিশ কি পারবে শব্দ দানবের দাপট রুখতে?

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩৬
Share: Save:

শেষ পর্যন্ত শব্দ দানবের হাত থেকে কি রক্ষা পাবে মানুষ? না কি অন্য বারের মতো এবারেও পুলিশ-প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রীতিমতো ফাটবে নিষিদ্ধ শব্দবাজি?

সর্বোচ্চ আদালতের কড়া নির্দেশিকা, এবার রাত আটটা থেকে দশটার মধ্যে বাড়ি পোড়াতে হবে। তার আগে বা পরে কোনও ভাবেই বাজি পোড়ানো যাবে না। তবে সেই নির্দেশিকা বাস্তবে কতখানি কার্যকর করতে সক্ষম জেলা-প্রশাসন, সে বিষয়ে সংশয় রয়েই যাচ্ছে।

১৬ সেপ্টেম্বর গাংনাপুরে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মারা যান দু’জন। সেই ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। গত ক’দিনে বিভিন্ন এলাকায় নিষিদ্ধ শব্দবাজি-সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শান্তিপুরে ধরা পড়েছে দু’জন। চাকদহ ও গাংনাপুরে ধরা পড়েছে দু’জন। কল্যাণীতেও রবিবার রাতে পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করেছে। এখনও পর্যন্ত নদিয়া জেলাতেই গ্রেফতার হয়েছে ২৫ জন। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে প্রায় ৯২৪ প্যাকেটের ৪৬৩৪ কেজি বাজি। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৫৪৫ কেজি বাজির মশলা।

চাকদহের এক ব্যবসায়ী বলেন, “গাংনাপুরের ঘটনার পর যে ভাবে প্রশাসন সক্রিয় হয়ে উঠেছে, তাতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রকাশ্যে বাজি বিক্রি করতেই ভয় লাগছে।’’

জেলার বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেল, এবারে বাজি বিক্রির হিড়িক নেই। প্রকাশ্যে মিলছে না শব্দবাজিও। তা হলে কি আইন মেনে ‘নিষিদ্ধ’ শব্দবাজি একেবারেই কিনছেন না ক্রেতারা? বাস্তব তা বলছে না। কারণ, কিছু কিছু শব্দবাজি বিক্রি হচ্ছে অত্যন্ত গোপনে। গাংনাপুরের বাজি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়া জেলা থেকে বেশি পরিমাণে বাজির আমদানি হচ্ছে। অন্য জেলার বাজি কারখানার মালিকেরা এই বাজার ধরার চেষ্টায় রয়েছেন। যদিও এই দাবি মানতে নারাজ প্রশাসন।

জেলা পুলিশের দাবি, শব্দদানবের উৎপাত বন্ধ করতে কালীপুজো থেকে ভাইফোঁটা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ করা হচ্ছে। উৎসবের দিনগুলোতে থানার গাড়ি ঘুরবে বিভিন্ন এলাকায়। সেই সঙ্গে পুলিশের একটি বিশেষ টিম মোটরবাইক নিয়ে এলাকায় নজরদারি চালাবে। তা ছাড়া, যে সব এলাকায় শব্দবাজি পোড়ানোর প্রবণতা রয়েছে, সেই এলাকাগুলি আলাদা করে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে পুলিশ-পিকেটিং থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার। তিনি বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়িত করার জন্য আমরা সব ধরনের আগাম ব্যবস্থা নিয়েছি। আইন না মানলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলছেন, “শব্দবাজির উপরে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়িত করা অত্যন্ত জরুরি। এর কারণে শরীর ও মনে নানা সমস্যা দেখা দেয়। কানের সমস্যার পাশাপাশি রক্তচাপ বেড়ে যাতে পারে।’’

তাই পরিসংখ্যান যা-ই হোক না কেন, পরিবেশবিদেরা কিন্তু নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। শব্দবাজির বিক্রি নিয়ে প্রশাসনের কড়াকড়ি থাকলেও বাজি ফাটানোর সময়সীমা আদৌ মানা হবে কি? আপাতত, সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

District Authority Supreme Court Fire Cracker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE