—প্রতীকী ছবি।
কয়েক সেকেন্ডের একটি ভিডিয়ো। এক জন লোক সামান্য তরল পদার্থ একটি পাত্রে ঢেলে দিলেন। তার পরে জল ঢেলে একটি কাঠি দিয়ে নাড়তে শুরু করলেন। অবিকল দুধ! সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিয়ো সত্য না মিথ্যা তা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। তবে দুধ যে ভেজাল হচ্ছে তা ইতিমধ্যে টের পেয়েছে নবাবের জেলা, মুর্শিদাবাদ।
জুলাইয়ে দুধে ভেজালের খবর পেয়ে বহরমপুরের উত্তরপাড়ার একটি বেসরকারি চিলিং প্ল্যান্টে হানা দিয়ে সাময়িক ভাবে সেই প্ল্যান্ট বন্ধ করেছিল প্রশাসন। সেই দুধের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়েছিল।
স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, সেই সময় শুধু উত্তরপাড়ার ওই প্ল্যান্ট নয়, জেলার একাধিক চিলিং প্ল্যান্ট থেকে দুধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন হোটেল থেকে মাংস, শিশু খাদ্য ও নুনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই রিপোর্ট এলেও এখনও প্রকাশ করেনি স্বাস্থ্য দফতর।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, খাদ্য সুরক্ষার নিয়ম অনুযায়ী ল্যাবরেটরি থেকে যে রিপোর্ট আসবে সেই রিপোর্ট প্রথমে যে সংস্থা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল তাদের দেওয়া হবে। তারা যদি সেই রিপোর্টের সত্যতা মেনে নেয় তখন সেই রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর রিপোর্ট মানতে না চাইলে ফের পরীক্ষায় পাঠাতে হয়। সংস্থাগুলিকে ল্যাবরেটরির রিপোর্ট পাঠানো শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা যাবে না।
যদিও মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলছেন, ‘‘ভেজাল রুখতে আমরা কড়া নজর রেখেছি। অভিযান চালিয়ে ভেজাল জিনিসপত্র উদ্ধার করা হচ্ছে। ভেজাল কারবারিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।’’ যদিও প্রশ্ন উঠছে, ভেজাল বন্ধে পুলিশ-প্রশাসনের কড়াকড়ি থাকলে দিনের পর দিন তা চলছে কী ভাবে?
শুধু দুধ নয়, ঘি, ভোজ্য তেল, কালো জিরে, মবিল, ঘড়ি, মোবাইল, আইফোন, সিমেন্ট, অনুখাদ্য, কীটনাশক, নামী কোম্পানির যন্ত্রাংশ— ভেজালের তালিকাটা দীর্ঘ। বহরমপুরের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ এই ধরনের নকল জিনিসপত্র উদ্ধার করেছে। ধরাও পড়েছে বেশ কয়েক জন। চলতি মাসেই বহরমপুরের শিয়ালমারায় অভিযান চালিয়ে ২৫০০ লিটার ভেজাল ভোজ্য তেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, কম দামের পাম তেলের সঙ্গে সরষের তেল মেশানো হচ্ছিল। স্বাদ ও ঝাঁঝের জন্য মেশানো হচ্ছিল এক ধরনের রাসায়নিক। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভেজাল ভোজ্য তেল, যন্ত্রপাতি আটক করেছে। তবে তিন অভিযুক্ত পলাতক।
বহরমপুরের মধুপুরের বাসিন্দা অনন্যা ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘চারপাশে ভেজালের যা বহর তাতে কোনটা যে আসল আর কোনটা নকল তা আমরা বুঝব কী করে? ভেজাল কারবারিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy