Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
দর্শনার চিনিকল থেকে নদীতে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে সারা বছর, দু’দেশের বৈঠকে লাভ হয়নি কিছুই

চূর্ণি-দূষণ ঠেকাতে জেলাশাসকের চিঠি

বাড়ির ধার ঘেঁষে বয়ে গিয়েছে নদী। তা সে নদীতে গা ভেজানো বরাবরের অভ্যেস। এত দিনে কখনও ছেদ পড়েনি নিয়মে। কিন্তু এ বছর আর পেরে ওঠা যাচ্ছে না। দুর্গন্ধময় কালো জলে কোনও মতে ডুব দিয়েই ছুট দেওয়া বাড়ির দিকে।

ক্ষীণ-চূর্ণি: শুকিয়ে আসছে নদী। নিজস্ব চিত্র

ক্ষীণ-চূর্ণি: শুকিয়ে আসছে নদী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৪
Share: Save:

বাড়ির ধার ঘেঁষে বয়ে গিয়েছে নদী। তা সে নদীতে গা ভেজানো বরাবরের অভ্যেস। এত দিনে কখনও ছেদ পড়েনি নিয়মে। কিন্তু এ বছর আর পেরে ওঠা যাচ্ছে না। দুর্গন্ধময় কালো জলে কোনও মতে ডুব দিয়েই ছুট দেওয়া বাড়ির দিকে। সে পথে যেতে যেতেই বিরবির করছিলেন প্রৌঢ়া, ‘গা জ্বলে-পুড়ে যাচ্ছে গো’। টিউবঅয়েলের জলে গা-হাত-পা ধুয়ে তবে রক্ষে।

এ অবস্থা শুধু মাজদিয়ার বাসিন্দা বিনাপানি অধিকারীর নয়। চূর্ণির তীরবর্তী এলাকার সব বাসিন্দারই কমবেশি এক অভিজ্ঞতা। চূর্ণির জল দূষণের জেরে অনেকেই স্নান করা বন্ধ করে দিয়েছেন। হারিয়ে যাচ্ছে নদীর মাছ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাংলাদেশের দর্শণায় একটি চিনি কলই এর জন্য দায়ী। ওই মিল থেকে মাঝেমধ্যেই রাসায়নিক ও তরল বর্জ্য পড়ে মাথাভাঙা নদীতে। তার জেরেই মাথাভাঙা ও চুর্ণী নদীর জল দূষিত হচ্ছে।

বছর দুয়েক আগে বাংলাদেশের রাজশাহীতে দু’দেশের বৈঠক হয়েছিল। সেখানে নদিয়ার তৎকালীন জেলাশাসক মাথাভাঙা ও চূর্ণির দূষণের বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। সে দিন বাংলাদেশের চুয়াডাঙার ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু এ পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টে দূষণ বেড়েছে। তাই এ বার নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত রাজ্যের পরিবেশ দফতরের প্রধান সচিব অর্ণব রায়ের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন।

সুমিত গুপ্ত বলেন, “২০১৫ সালের ২৫ নভেম্বর নদিয়ার জেলাশাসকের সঙ্গে বাংলাদেশের চুয়াডাঙার ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টরের বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু আজও নদীতে দূষিত বর্জ্য ফেলা বন্ধ হল না।”

মঙ্গলবার নদিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রও জানান, বাংলাদেশের দর্শনার চিনিকলের দূষিত বর্জ্য আগে শুধুমাত্র বর্ষাকালে ফেলা হত। এখন প্রতি মাসেই ছাড়া হচ্ছে। যার ফলেই নদীর এই হাল হয়েছে। সেই দূষিত জলই রিভার লিফটিং ইরিগেশনের মাধ্যমে সেচের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে দূষণ এখনও না আটকালে চাষবাদেও বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

River Pollution Churni River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE