Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
চলে গেলেন আক্রান্ত ডাক্তার

মাঝরাতে ছুটি, বন্ধ হাসপাতাল

অর্জুনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোজ গড়ে ৮-১০ জন রোগী ভর্তি থাকে। দুই চিকিৎসক এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছেন। এক জন ছুটিতে যাওয়ায় রাতে ছিলেন শুধু আশিস অধিকারী। রাত সওয়া ১০টা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত এক জনকে নিয়ে আসে জনা চল্লিশ লোক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:৫৬
Share: Save:

সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের উপর ফের হামলার অভিযোগ উঠল।

শুক্রবার রাতে ফরাক্কার অর্জুনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওই হামলার পরে আতঙ্কিত চিকিৎসক, নার্স ও সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা ‘হাসপাতাল বন্ধ’ নোটিস দিয়ে ভোরেই চলে গিয়েছেন। শনিবার সকালে রোগীরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখেন সেখানে তালা ঝুলছে। সকলে হাসপাতাল ছাড়ার আগে মাঝরাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি থাকা জনা পাঁচেক রোগী ও প্রসূতিকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। দুপুরে বিডিও-র হস্তক্ষেপে অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসক আনিয়ে পুলিশি পাহারায় ফের স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করা হয়।

অর্জুনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোজ গড়ে ৮-১০ জন রোগী ভর্তি থাকে। দুই চিকিৎসক এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছেন। এক জন ছুটিতে যাওয়ায় রাতে ছিলেন শুধু আশিস অধিকারী। রাত সওয়া ১০টা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত এক জনকে নিয়ে আসে জনা চল্লিশ লোক। আশিসের অভিযোগ, অবস্থা গুরুতর বুঝে রোগীকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে রেফার করতেই হামলা শুরু হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে তাঁর আবাসনে ভাঙচুর চালায় রোগীর বাড়ির লোকজন।

এর পরেই আশিস মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে পুরো ঘটনা জানান। ভর্তি থাকা রোগীদের মাঝরাতেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা ঝুলিয়ে ভোরে সকলেই চলে যান। বিডিও কেশাং ধেনডুপ ভুটিয়া বলেন, “রাতেই ফরাক্কা থানার আইসি গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যারা হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশের কাছে অভিযোগে আশিস লিখেছেন, “আমার জীবন বিপন্ন। এই অবস্থায় এখানে কাজ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই হাসপাতাল ছেড়ে যেতে বাধ্য হলাম।”

তবে ফরাক্কা থানার আইসি উদয়শঙ্কর ঘোষ বলেন, “ভাঙচুর বা মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি। চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর বাড়ির লোকজনের বচসা হয়েছে।” বিডিও বলেন, “নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে চিকিৎসক আমায় জানাতে পারতেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ করে ঠিক কাজ করেননি। রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠক ডেকে সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই নিয়ে জঙ্গিপুর মহকুমায় এই সপ্তাহেই তিনটি সরকারি হাসপাতালে হামলার ঘটনা ঘটল। তিনটিরই কেন্দ্রে রোগী রেফার। জঙ্গিপুরে চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় তিন জন গ্রেফতার হলেও রঘুনাথগঞ্জের রাজনগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও অর্জুনপুরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস বলছেন, “এ ভাবে বারবার চিকিৎসকদের উপরে হামলা মেনে নেওয়া যায় না। জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা করার জন্য পুলিশকে বলেছি।” তবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা ঝোলানো যে ঠিক হয়নি, তা তিনিও বলছে। কেন করলেন এ কাজ? আশিস বলেন, “এ ব্যাপারে যা বলার, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকই বলবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Closed Refer Doctor Patients
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE