Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কান্দিতে রোগী-মৃত্যু ঘিরে গন্ডগোল, প্রহৃত চিকিৎসক

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কান্দির শাসপাড়ার বাসিন্দা  উম্মে সালমা (৩৮) হৃদরোগে ভুগছিলেন। শনিবার দুপুরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে নিয়ে আসা হয় কান্দি হাসপাতালে। সেখানে ভর্তি করানোর মিনিট পনেরোর মধ্যেই তিনি মারা যান।

পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:২৭
Share: Save:

রোগীমৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল হাসপাতালে। রোগীর আত্মীয়েরা উত্তেজিত হয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসককে বেধড়ক মারধর করে বলেও অভিযোগ। শনিবার কান্দি মহকুমা হাসপাতালের ওই ঘটনার পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত ওই রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ তদন্তও শুরু করেছে।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কান্দির শাসপাড়ার বাসিন্দা উম্মে সালমা (৩৮) হৃদরোগে ভুগছিলেন। শনিবার দুপুরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে নিয়ে আসা হয় কান্দি হাসপাতালে। সেখানে ভর্তি করানোর মিনিট পনেরোর মধ্যেই তিনি মারা যান। তার পরে রোগীর পরিবার অভিযোগ তোলেন, বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন উম্মে।

অভিযোগ, বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রদীপকুমার মজুমদারকেও বেধড়ক মারধর করেন রোগীর বাড়ির লোকজন। বর্তমানে ওই হাসপাতালেই প্রদীপবাবুর চিকিৎসা চলছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উম্মেকে ভর্তি নেওয়া হয়। ইসিজিও করানো হয়। তখন হাসপাতালের বহির্বিভাগে ছিলেন প্রদীপবাবু। খবর পেয়েই তিনি ছুটে যান ওই রোগীর কাছে। কিন্তু ইসিজি রিপোর্ট পরীক্ষা করার সময়েই ওই রোগী মারা যান। রোগীর পরিবার কোনও কথা বুঝতে চাননি। হাসপাতালের মধ্যেই তাঁরা প্রদীপবাবুকে মারধর শুরু করেন। পরে ওই ওয়ার্ডের এক চিকিৎসক ও অন্য রোগীর আত্মীয়েরা প্রদীপবাবুকে উদ্ধার করে।

অন্য এক রোগীর আত্মীয়ের কথায়, ‘‘এই ঘটনায় কিন্তু চিকিৎসকের কোনও গাফিলতি ছিল না। বরং চিকিৎসক যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। তার পরেও কেন তাঁকে মারধর করা হল তা বুঝতে পারলাম না।’’ উম্মের স্বামী মহম্মদ কাশেম আলির অভিযোগ, ‘‘চিকিৎসককে বার বার ডেকে পাঠানোর পরেও দেরি করে আসেন। আর সেই কারণেই আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা মিথ্যা। বিনা চিকিৎসায় রোগীমৃত্যুর ঘটনাকে আড়াল করতেই আমাদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মিথ্যে অভিযোগ করছেন।’’ যদিও রোগীর পরিবারের লোকজন কোথাও কোনও লিখিত অভিযোগ না জানিয়েই হাসপাতাল থেকে উম্মের দেহ নিয়ে বাড়ি চলে যান।

ঘটনার পরে হাসপাতালে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। জখম ওই চিকিৎসক প্রদীপকুমার মজুমদার বলেন, “যে কোনও মৃত্যু দুঃখজনক। ওই মহিলাকে বাঁচানোর সব রকম চেষ্টা করা হয়েছিল।’’

হাসপাতালের সুপার মহেন্দ্রনাথ মাণ্ডি বলেন, “সিসিক্যামেরার ফুটেজ-সহ পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। গোটা ঘটনাটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককেও জানাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Violence Beating Doctor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE