ফাইল চিত্র
কেউ খোলা মাঠে, কেউ বা গাছতলায়। কিছু পরিবারের ঠাঁই হয়েছে খোলা বারান্দায়। গোয়ালের গরু ঘুরে বেড়াচ্ছে অচেনা মাঠে। উঠোন জোড়া মুরগি-হাঁস কোথায় হারিয়ে গিয়েছে হদিস নেই। এমনই ছন্নছাড়া প্রায় সাড়ে চারশো পরিবারের জন্য সরকারি পুনর্বাসনের স্পষ্ট কোনও ব্যবস্থা এখনও করে উঠতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন। এই অবস্থায় পড়শি গ্রামের মানুষজনই কমিটি গড়ে ভাঙন-বিধ্বস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নজির গড়লেন। ভিটেহারা মানুষের সাহায্যার্থে সেই গ্রামীণ কমিটির মানুষজনই এই ক’দিনে সংগ্রহ করে ফেলেছেন প্রায় চার লক্ষ টাকা। লক্ষ্য একটাই— পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। আশপাশের গ্রাম ঘুরে অর্থ সংগ্রহের পাশাপাশি বিকেলে শখ করে নদী ভাঙন দেখতে আসা দূর-দূরান্তের মানুষের কাছেও হাত পেতে সাহায্য চেয়ে যে তহবিল গড়ে তুলেছেন তাঁরা।
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, গত প্রায় এক মাস ধরে নদী ফুঁসছে। ভাঙনে একের পর এক গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেলেও হেলদোল নেই প্রশাসনের। গত এক মাসে দু’-একবার ‘বালির বাঁধ’ দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করেনি প্রশাসন। স্থানীয় পঞ্চায়েত দুর্গতদের হাতে একটি করে ত্রিপল আর শুকনো খাবার দিয়েই দায় সেরেছে। এই অবস্থায় কিছুটা হলেও তাঁদের সুরাহা হয়েছে ভাঙন রোধে তৈরি গ্রামবাসীদের কমিটির অর্থসাহায্যে। শামিম আখতারের বাড়ি গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছিল দিন
কুড়ি আগে। তারপর থেকে তাঁর ঠাঁই হয়েছে প্রাথমিক স্কুলের ত্রাণশিবিরে। শামিম এদিন বলেন, ‘‘টাকাটা যৎসামান্যই। তবে বিপদের দিনে এটা অনেক কাজে দেবে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি পুনর্বাসনের।’’ ধানঘড়া ও হিরানন্দপুর ‘গঙ্গা ভাঙন কমিটি’র অন্যতম কর্মকর্তা সাফুল শেখ বলেন, ‘‘গঙ্গার ভাঙনে একের পর এক বাড়িঘর তলিয়ে গিয়েছে। এতদিনেও কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি দেখে গ্রামবাসীরাই ঠিক করি, নিজেরা কমিটি গঠন করে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াব। সামান্য সাহায্য। তবুও টাকাটা কাজে আসবে বলেই বিশ্বাস।’’ এদিন ধানঘড়ার কমিটির ভূমিকা দেখে এ বার ধুসুরিপাড়ার মানুষও কমিটি গড়ার কথা ভাবছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy