দাম বেড়ে নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে দুল, নাকছাবিও। নিজস্ব চিত্র
নিছক সাপ্তাহিক নয়, বেলডাঙা সোনাপট্টিতে যেন সেই ফাল্গুন থেকে লকডাউন!
নাকছাবি থেকে আংটি— বেলডাঙার সোনা কারিগরদের জাদু এ যাবত ছড়িয়ে ছিল ঝাড়খণ্ড থেকে বিহার কখনও বা আরও সুদূরে। সম্বৎসরে প্রায় আড়াইশো কোটি টাকার সেই অলঙ্কারের বাজার স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে লকডাউনের আবহে।
আনলক পর্বে সে বাজার মৃদু-মন্দ খুললেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কাঁচা সোনা। কারণ সেই আকর সোনার খোঁজে বেলডাঙা নির্ভর করত কলকাতার উপরে। যে এলাকা থেকে সোনা আসত, কলকাতার সেই সব এলাকা কনটেনমেন্ট জ়োনের আওতায় পড়ায় সেখানে প্রায় প্রবেশ নিযেধ হয়ে গিয়েছে বাইরের ব্যবসায়ীদের। যাতায়াত থমকে যাওয়ায় ইদের আগে সে বাজার তাই ধুঁকছে। তার উপর গত কয়েক দিনে আকাশ ছুঁয়েছে সোনার মূল্য। সব রেকর্ড ভেঙে গত কয়েক দিনে সোনার দাম পঞ্চাশ হাজার পেরিয়েছে। বুধবার, ১০ গ্রাম পাকা সোনার দাম ৫৩,৩১০ টাকা। গয়না সোনার দাম ৫০,৫৮০ টাকা। এই অবস্থায় সোনাপট্টির একের পর এক দোকানে ঝাঁপ পড়ে গিয়েছে।
বেলডাঙার প্রবীণ স্বর্ণশিল্পী কিশোর ভাস্কর বলেন, “এখনও গ্রামীণ মানুষ এসে ভরিতে সোনার দাম জানতে চান। ভরির (১১.৬৬৪ গ্রাম) হিসাবে দাম দাঁড়িয়েছে ৫৯ হাজার ৮০০ টাকা। এক ভরি হলমার্ক যুক্ত গয়নার মজুরি-সহ দাম পড়ছে ৬৫ হাজার টাকা। যেটা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তার উপর কাঁচা সোনার আমদানি বন্ধ। কলকাতা থেকে সোনা আনা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ইদের আগে যে বাজারের ঘুম ছিল না চোখে সে এখন ঘুমে কাদা।” এমন আগুনে দামের জেরে মানুষ সোনা থেকে মুখ ফিরিয়েছেন। স্বর্ণশিল্পী গৌতম সিংহ বলেন, “এখন মানুষের আয় নেই। বাজারের চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা। এখন সোনা কেনা বিলাসিতা।’’ ফলে, ইদ এবং বিয়ের মরসুম সত্ত্বেও সোনাপট্টিতে আঁধার। বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির বেলডাঙা শাখার সম্পাদক অভিমন্যু কর্মকারের গলায় তাই আক্ষেপ, ‘‘ইদের বাজারের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। সোনার দর বেড়ে ওঠায় সেই আশাও পুড়ে ছাড়াখার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy