Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

আবার চুরির ছক, পাকড়াও পলাতক বন্দি

কালীপুজোর রাতে কৃষ্ণনগরের নদিয়া জেলা সংশোধনাগার থেকে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিল মাদক পাচারে সাজাপ্রাপ্ত আসরাফুল মোল্লা। আর, শনিবার ভোরে তাকে চোর সন্দেহে ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশীপুর থানার হাতে দিল জনতা।

আসরাফুল মোল্লা। নিজস্ব চিত্র

আসরাফুল মোল্লা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কৃষ্ণনগর ও কাশীপুর শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪৪
Share: Save:

আদতে সে পাকা চোর। কিন্তু কাজটা করেছিল কাঁচা। হয়তো বা বেশি লোভেই।

কালীপুজোর রাতে কৃষ্ণনগরের নদিয়া জেলা সংশোধনাগার থেকে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিল মাদক পাচারে সাজাপ্রাপ্ত আসরাফুল মোল্লা। আর, শনিবার ভোরে তাকে চোর সন্দেহে ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশীপুর থানার হাতে দিল জনতা। বিকেলেই নদিয়ার কোতয়ালি থানার পুলিশ তাকে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। আজ, রবিবার তাকে কৃষ্ণনগর আদালতে তোলার কথা।

পুলিশ ও সংশোধনাগার সূত্রে জানা যায়, আসরাফুলের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া থানার চৌহাটা গ্রামে। ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়ের মতো নানা রাজ্যে তার বিরুদ্ধে চুরির মামলা ছিল। উত্তরপ্রদেশে একটি ব্যাঙ্ক থেকে ৩৬ কোটি টাকা ও ২৫ কেজি সোনা লুটের ঘটনাতেও তাকে খুঁজছিল পুলিশ। ২০১৩ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনারই হাসনাবাদ থানা মাদক পাচারের মামলায় তাকে ধরে এবং ১২ বছরের জেল হয়। সেই সাজার মেয়াদই সে খাটছিল।

গত ১০ মার্চ দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে কৃষ্ণনগরে আনা হয় আসরাফুলকে। এর মধ্যে কয়েক বার সে প্যারোলে বাড়িও গিয়েছে। কালীপুজোর রাত শেষে, গত বুধবার ভোরে সংশোধনাগারে বন্দিদের গণনার সময়ে দেখা যায়, আসরাফুল নিখোঁজ। পরে বোঝা যায়, একটি লোহার রডকে বাঁকিয়ে আঁকশি করে তার পিছনে দু’টি গামছা বেঁধে জেলের পাঁচিল টপকে পালিয়েছে। খোদ কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের শহরে এই ঘটনায় হইচই পড়ে যায়। কারা দফতরের দমদম রেঞ্জের ডিআইজি অরিন্দম সরকার তদন্তে আসেন। জেলা সংশোধনাগারে নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

এর পর কয়েক দিন আর তার হদিস পাওয়া যায়নি। শনিবার ভোরে ফের যবনিকা ওঠে কাশীপুর থানার পোলেরহাট-২ পঞ্চায়েতে অনন্তপুর গ্রামে। পুলিশের দাবি, জেল থেকে পালানোর পরেই পরিচিতদের থেকে আসরাফুল খবর পেয়েছিল, অনন্তপুর গ্রামে একটি চালের গুদামের ভল্টে ২৫ লক্ষ টাকা রাখা আছে। সেটা হাতাতেই সে ওই গ্রামে আসে। তবে বড় কাজে নামার আগে এলাকারই একটি বাড়িতে চুরি করবে বলে সে ঠিক করেছিল।

এ দিন ভোরে প্রাতঃকৃত্য করতে বেরিয়ে ওই বাড়ির এক মহিলা দেখেন, বাড়ির পিছনে কে যেন ঘাপটি মেরে বসে আছে। তিনি ‘চোর চোর’ বলে চেঁচামেচি শুরু করে দেন। বাড়ির আর আশপাশের লোকজন এসে লোকটিকে ধরে ফেলে। থানায় খবর যায়। কৃষ্ণনগর জেলা সংশোধনাগার থেকে পালানোর পরেই সব থানায় আসরাফুলের ছবি দিয়ে খবর পাঠানো হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে সেই ছবি মিলিয়ে দেখা যায়, এ-ই সেই আসরাফুল। পুলিশের দাবি, জেরায় সে সব কথাই কবুল করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arrest Inmate Heist Thief
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE