Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
আশাবরী আবাসন হত্যা মামলা

কালসর্পের কথা সাক্ষ্যে

অভিজিৎ তাঁর সাক্ষ্যে জানান, দেহ উদ্ধারের দু’দিন আগে, ৪ জানুয়ারি সকালে তাঁর মা ইরা মিত্র আশাবরী আবাসনে গিয়েছিলেন। মাসি বিজয়া তাঁকে জানান, আত্রেয়ীর হাত দেখে তার ‘কালসর্প যোগ’ আছে বলে জানিয়েছেন এক জ্যোতিষী, দোষ কাটাতে যজ্ঞ করার কথাও বলেছেন।

আদালতে: শুনানির পর নিত্যানন্দ। নিজস্ব চিত্র

আদালতে: শুনানির পর নিত্যানন্দ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৭ ১৩:০০
Share: Save:

পুলি‌শ যখন দরজার তালা ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢুকল, বৃদ্ধা প্রভা দাসের মৃতদেহ হাত বাঁধা অবস্থায় খাটের এক কোণে হেলান দিয়ে বসানো, গলায় কালশিটে। তাঁর ভাইঝি, মধ্য চল্লিশের বিজয়া বসুর দেহ পড়েছিল ঘরের মেঝেয়। বিজয়ার কিশোরী মেয়ে আত্রেয়ীর দেহ ছিল খাটে।

বহরমপুরে আশাবরী আবাসন হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে এমন বর্ণনাই দিলেন আত্রেয়ীর মাসতুতো দাদা, একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী অভিজিৎ মিত্র। গত ২০১৪ সালের ৬ জানুয়ারি শহরের প্রাণকেন্দ্র জনবহুল কাদাই এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে ওই তিন জনের দেহ মেলে। সাত দিন পরে শিলিগুড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় জ্যোতিষী নিত্যানন্দ দাসকে। এখন জেলা জজ বিভাস পট্টনায়েকের এজলাসে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। ৪৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ইতিমধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

অভিজিৎ তাঁর সাক্ষ্যে জানান, দেহ উদ্ধারের দু’দিন আগে, ৪ জানুয়ারি সকালে তাঁর মা ইরা মিত্র আশাবরী আবাসনে গিয়েছিলেন। মাসি বিজয়া তাঁকে জানান, আত্রেয়ীর হাত দেখে তার ‘কালসর্প যোগ’ আছে বলে জানিয়েছেন এক জ্যোতিষী, দোষ কাটাতে যজ্ঞ করার কথাও বলেছেন।

সরকারি আইনজীবী গোরা সেন জানতে চান, তিন জনের মৃত্যুর কথা তাঁরা কী ভাবে জানলেন?

অভিজিৎ জানান, ৫ জানুয়ারি সকালে বাজার করে তাঁর বাবা যান আশাবরীতে। আত্রেয়ী সে দিন তাঁদের ঘাটবন্দরের বাড়ি আসবে বলেছিল। তাই তিনি তাকে আনতে যান। গিয়ে দেখেন, ফ্ল্যাটের দরজায় তালা। তিনি বাড়ি ফিরে তিন জনের মোবাইলেই টানা ফোন করতে থাকেন। কখনও ‘নেটওর্য়াক সীমার বাইরে’, কখনও ‘সুইচড অফ’ শোনা যায়। পরের দিন তিনি ফের ওই ফ্ল্যাটে যান। তখনও চা তালাবন্ধ। দুপুরে বহরমপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। সন্ধ্যায় পুলিশ ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। খবর পেয়ে বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে অভিজিৎও সেখানে যান।

সাক্ষ্য যখন চলছে, কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিত্যানন্দ কখনও মুখ কুঁচকে অভিজিতের দিকে চেয়ে থেকেছেন, কখনও আবার ভাবলেশহীন। এক বার মাথার উপরে পাখা দেখিয়ে বলেন, ‘গরম লাগছে, চালিয়ে দিন।’ ঘণ্টাখানেক ধরে সাক্ষ্যগ্রহণ চলায় এ দিন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করার সময় পাননি। মাঝপথে তিনি হঠাৎ বিচারকের কাছে আবেদন জানান, ‘আজ এখানেই শেষ করুন।’ তবে বিচারক তা কানে তোলেননি। আজ, বুধবার ফের ওই মামলার শুনানি হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE