প্রতীকী ছবি।
মাছ ধরতে এসে কারও জীবন বাঁচানোর দায়িত্ব এসে পড়বে, স্বপ্নেও ভাবেননি ভগীরথ। জলে ভেসে-ভেসেই জীবন কাটে। মাছের খোঁজে নিজের গ্রাম মালদহের বৈষ্ণবনগরের পাল্লালপুর থেকে নৌকা বেয়ে বছর পঞ্চাশের ভগীরথ রায় চলে যান দূর-দূরান্তের নদীতে। তেমন ভাবেই মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান থেকে সোমবার এসে পৌঁছেছিলেন বহরমপুরে, ভাগীরথীতে মাছ ধরতে। মঙ্গলবার সকালে গাঁধি কলোনি লাগোয়া ঘাটের পাড়ে নৌকা বেঁধে নৌকার উপরেই স্টোভের উপর ভাত রান্না করছিলেন। এমন সময় ‘ঝপাস’ করে শব্দ। রামেন্দ্র সুন্দর ত্রিবেদী সেতুর উপর থেকে কী একটা যেন পড়ল নদীতে। ভাল করে তাকাতে দেখেন, এক জন মানুষ হাবুডুবু খাচ্ছেন। তার পরেই নারীকণ্ঠে ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ আওয়াজ।
এ বার স্পষ্ট বুঝতে পারলেন ব্যাপারটা। কোনও মহিলা সেতু থেকে পড়েছেন নদীতে। সিদ্ধান্ত নিতে আর দেরি করেননি। রান্না ফেলে দ্রুত নৌকা চালিয়ে দেন ডুবন্ত মহিলার দিকে। সময়মতো মাঝ নদী থেকে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। কিছু ক্ষণের ভিতরেই খবর ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ আসে। মহিলাকে নিয়ে গিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া বছর পঁচিশের যুবতীর নাম তুহিনা খাতুন। তাঁর বাড়ি বীরভূমের নলহাটির হাটখোলা গ্রামে। তবে ওই মহিলা এ দিন সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। পুলিশকর্তারাও জানান, যুবতীর কাছ থেকে পরিচয় ও আত্মীয়দের নাম-ঠিকানা জানতে প্রচুর বেগ পেতে হয়েছে। পুলিশের প্রশ্নের সামনে কার্যত চুপ করে মাথা নীচু করে বসেছিলেন তিনি।
অনেক কষ্টে তাঁর এক দূর সম্পর্কের দিদি-র নাম জানা গিয়েছে। ইদে বহরমপুরে তাঁর বাড়িতেই থাকতে আসছিলেন তুহিনা। আচমকা সেতুর ওপর জুতো ও মোবাইল রেখে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। তাঁর ওই দিদিই পুলিশকে জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক সমস্যায় ভুগছেন বোন। ভগীরথ বলছেন, “ওর জীবন বাঁচাতে পেরে খুব ভালো লাগছে। কিন্তু অল্পবয়সী মেয়েটি এমন একটা পথ বেছে নিতে চাইছিল চিন্তা করে খারাপও লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy