Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

এক ধাক্কায় পদচ্যুত হলেন পাঁচ ওসি

পঞ্চায়েত ভোট মেটার পরে নদিয়ায় ওসি-র পদ থেকেই সরিয়ে দেওয়া হল পাঁচ অফিসারকে। এঁদের মধ্যে তিন জন দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া ওসি। তাঁদের বদলে অন্য কিছু অফিসারকে গুরুত্বপূর্ণ থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৮ ০১:৫৭
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোট মেটার পরে নদিয়ায় ওসি-র পদ থেকেই সরিয়ে দেওয়া হল পাঁচ অফিসারকে। এঁদের মধ্যে তিন জন দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া ওসি। তাঁদের বদলে অন্য কিছু অফিসারকে গুরুত্বপূর্ণ থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সদ্য হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তির তালিকায় নদিয়া ছিল রাজ্যে অন্যতম শীর্ষে। শান্তিপুরে বড় গণ্ডগোল হয়েছে ভোটের দিন এবং তার পরেও। কৃষ্ণগঞ্জে গণনার দিন ব্যাপক অশান্তি হয়। গাংনাপুর ও তাহেরপুরে একাধিক অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। চাপড়ার শিকরা এলাকায় ভোটের আগেই গুলিতে খুন হন তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর কর্মী।

শান্তিপুর থানার ওসি রাজা সরকারকে পাঠানো হয়েছে তেহট্টে। চাপড়ার পার্থপ্রতিম রায় গিয়েছেন কোতোয়ালি থানায়। গাংনাপুরের ওসি মুকুল মিয়াঁকে কল্যাণী থানায় বদলি করা হয়েছে। এঁরা তিন জনেই যথেষ্ট অভিজ্ঞ। কৃষ্ণগঞ্জ থানার ওসি সুরজিৎ ঘোষ এবং তাহেরপুর থানার ওসি অভ্র বিশ্বাসকে নাকাশিপাড়া থানায় বদলি করা হয়েছে। এই পাঁচ জনের কাউকেই ওসি বা আইসি-র পদে রাখা হয়নি।

ওসি হিসেবে শান্তিপুর থানায় পাঠানো হয়েছে অনিমেষ দে-কে। চাপড়ায় নাদিম আখতার, গাংনাপুরে প্রদ্যোৎ চক্রবর্তী, কৃষ্ণগঞ্জে রাজশেখর পাল ও তাহেরপুরে অভিজিৎ বিশ্বাস ওসি হয়েছেন। এঁরা আপাতত অন্য কোনও থানার দায়িত্বে ছিলেন না। হাঁসখালি এলাকাতেও মনোনয়ন পর্ব থেকেই সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত খুনোখুনির পর্যায়ে যায়নি। হাঁসখালি থানার ওসি অনিন্দ্য বসুকে সরানো হয়নি।

কেন এই রদবদল?

পুলিশের একাংশের মতে, বেশির ভাগ জায়গায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে গোলমাল করার অভিযোগ উঠলেও তা মাত্রা ছাড়াক, সেটা কেউ চাননি। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় অনেক ক্ষেত্রেই জেলা প্রশাসন ও শাসক দলের কর্তারা অস্বস্তিতে পড়েছেন। মুখ পুড়েছে পুলিশেরও। সম্ভবত তারই প্রতিফলন এই বদল। বিরোধী নেতারা আবার মনে করছেন, শাসকের বোধোদয় হয়েছে, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। বরং নতুন করে লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে ছক সাজানো হচ্ছে।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে-র মতে, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে যে সব এলাকা অশান্ত করতে হবে, সেখানেই বিশ্বস্ত অফিসারদের পাঠিয়েছে শাসক দল।’’ বিজেপির নদিয়া (উত্তর) সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারের দাবি, ‘‘নতুন যাঁদের ওসি করা হল, তারা আরও বেশি বশংবদ। পুলিশকে সামনে রেখে লোকসভা ভোটে আরও বড় সন্ত্রাসের ছক কষা হচ্ছে।’’

তৃণমূলের জেলা গৌরীশঙ্কর দত্ত অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘বশংবদ পুলিশ তৈরি করা বিজেপির নীতি। আমরা প্রশাসনের কাজে হস্তক্ষেপ করি না।’’ পুলিশ সুপার সন্তোষ পান্ডে বলেন, “এটা একেবারেই রুটিন বদলি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Poll Violence Police Sacked
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE