তৈরি হয়ে গিয়েছে মুড়াগাছা কলেজের ভবন। —নিজস্ব চিত্র।
নদিয়া জেলায় চারটি সরকারি মহাবিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন শুরু হচ্ছে চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে। কয়েক দিন আগে ওই কলেজগুলিতে ভর্তির জন্য অনলাইনে ফর্ম পূরণ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে কলেজগুলিতে অধ্যক্ষ-সহ বেশ কিছু শিক্ষকও নিয়োগ করা হয়েছে।
গত বছর নদিয়া জেলার নাকাশিপাড়া, কালীগঞ্জ, চাপড়া ও তেহট্টে সরকারি কলেজ তৈরির কাজ শুরু হয়। উচ্চশিক্ষা দফতর প্রতিটি কলেজ তৈরির জন্য সাত কোটি টাকা করে মঞ্জুর করে। জেলায় একমাত্র সরকারি কলেজ রয়েছে সদর শহর কৃষ্ণনগরে। তাই জেলার পড়ুয়াদের অনেকটা পথ পেরিয়ে কৃষ্ণনগর সরকারি মহাবিদ্যালয়ে আসতে হত। সেই পরিস্থিতি বিবেচনা করেই নাকাশিপাড়ার মুড়াগাছা, কালীগঞ্জের দেবগ্রাম, চাপড়ার সিক়ড়া ও তেহট্টে গত বছর সরকারি মহাবিদ্যালয় গড়ার কাজ শুরু হয়।
মুড়াগাছায় ১৬ বিঘে জায়গার উপর কলেজ তৈরির কাজ শুরু হয়। মাস খানেক আগেই কলেজের ভবন তৈরি সম্পন্ন হয়। তারপরে উচ্চশিক্ষা দফতর ওই কলেজে সাত জন পূর্ণ সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করে। এ ছাড়াও আটটি বিষয়ে সাম্মানিক স্নাতক স্তরের পঠনপাঠন চালু হবে কলেজে। স্থানীয় বিধায়ক তৃণমূলের কল্লোল খান বলেন, ‘‘রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর আরও দশ শিক্ষক দেবেন। এলাকার ছেলেমেয়েরা উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল করে কৃষ্ণনগর সরকারি মহাবিদ্যালয়ে পড়তে যেতেন। কিন্তু এ বার নাকাশিপাড়াতেই সরকারি কলেজ তৈরি হওয়ায় এলাকার পড়ুয়ারা এখানেই প়ড়তে পারবেন।’’
একই ভাবে কালীগঞ্জ ব্লকের দেবগ্রামের কৃষি ফার্মের তিন একর জায়গায় ২০১৪ সালের প্রথম দিকে শুরু হয় সরকারি কলেজ নির্মাণের কাজ। মাস কয়েক আগে সেই কাজ শেষ হয়। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে এই কলেজেও শুরু হবে পঠন-পাঠন। ইতিমধ্যে অধ্যক্ষ-সহ আট জন শিক্ষক কলেজে যোগ দিয়েছেন। চলতি শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান ও কলা বিভাগের চারটি করে মোট আটটি বিষয়ে সাম্মানিক স্নাতক স্তরে পঠন-পাঠন শুরু হবে। কলেজে ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে পড়ুয়াদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ তৈরি হয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে অনলাইনে দু’হাজার পড়ুয়া ভর্তি হতে চেয়ে আবেদন করেছেন। অন্য দিকে, তেহট্টের সংশোধনাগার সংলগ্ন এলাকা দত্তপাড়াতেও এ বছরই চালু হচ্ছে সরকারি মহাবিদ্যালয়। চলতি মাসের ১১ তারিখ থেকে অনলাইনে ভর্তির আবেদনপত্র পূরণ শুরু হয়েছে। ১৭ জুন আবেদনপত্র গ্রহণ শেষ হয়েছে। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৭ জুন থেকে শুরু হবে কাউন্সেলিং। এই কলেজে অবশ্য চলতি শিক্ষাবর্ষে পাঁচটি বিষয়ে সাম্মানিক স্নাতক স্তরে পড়াশোনা চালু হবে। চাপড়ায় কলেজ বলতে রয়েছে বাঙালঝি মহাবিদ্যালয়। সেখানকার পড়ুয়াদের সরকারি কলেজে পড়তে হলে হয় কৃষ্ণনগর নয়তো কলকাতায় যেতে হত। এ বছরই সীমান্তঘেঁষা সিকড়াতে চালু হচ্ছে সরকারি কলেজ। সেখানে কলা বিভাগের পাঁচটি বিষয়ে সাম্মানিক স্নাতক স্তরে পড়াশোনা চালু হবে। অর্নাসের প্রতিটি বিষয়ে আসন সংখ্যা ২৫। কলা বিভাগে পাশের আসন সংখ্যা ৪০। ইতিমধ্যে অনলাইনে ফর্ম পূরণ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। অধ্যক্ষ-সহ বেশ কিছু শিক্ষকও ইতিমধ্যে কাজে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরে কৃষ্ণনগর
সরকারি মহাবিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়ার দিন শেষ হতে বসেছে। চাপড়ার বাসিন্দা কামরুল বিশ্বাস বলেন, ‘‘বাড়ির পাশেই সরকারি কলেজ হওয়ায় এলাকার পড়ুয়াদের খুব সুবিধা হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy