ভরা গেরুয়া জোয়ারে নিঃসঙ্গ সবুজ দ্বীপের মতো শেষতক জেগে রইল বহরমপুর। বছর কয়েক আগেও কংগ্রেসের খাসতালুক হিসেবে মুর্শিদাবাদকেই চিনত পশ্চিমবঙ্গ। আর তার শেষ ‘ভুঁইয়া’ হিসেবে রাজনীতির তাবড় নেতারা চিনতেন যাঁকে তিনি বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। দীর্ঘ বিশ বছর ধরে বহরমপুর-গড়ে তিনিই শেষ কথা হয়ে উঠেছিলেন। কখনও বাম কখনও বা তৃণমূলের দাপটে, ছন্নছাড়া কংগ্রেসকে আঁটোসাঁটো ধরে রেখেছিলেন মুর্শির্দাবাদের নবাব ভূমিতে।
কিন্তু গত তিন বছর ধরে তাঁর নিজের হাতে গড়া বিধায়কেরা কিংবা অটুট রাখা জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত, পুরসভা— একে একে তৃণমূলের টোপ দল বদলে মুখ ফিরিয়েছিল, তারই জবাব বুঝি অধীরের এই জয়।
বিজেপি’র এত নেতা বলছেন, ‘‘দল ভেঙে কংগ্রেসের বিধায়ক, পুরপ্রধান, পঞ্চায়েত কিংবা জেলা পরিষদে পা বাড়ানো অধীরের পুরনো সহকর্মীদের বেইমানি যে মানুষ ভাল ভাবে নেননি, অধীরকে ভোট দিয়ে তাঁরা তাই বোঝাতে চেয়েছেন।’’
দীর্ঘ এই সাংসদ পর্বে এলাকার জন্য কাজও কম করেননি তিনি। শহরের নিরাপত্তা, বন্যা প্রতিরোধ সংক্রান্ত একাধিক প্রকল্প রূপায়ণে এগিয়ে আসা, কান্দি মাস্টার প্ল্যান কার্যকরী করতে তাঁর প্রয়াস, রেল প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন একাধিক ট্রেন চালু করা— সাংসদ হিসেবে অধীরকে যে বিপুল জনপ্রিয়তা দিয়েছে, তাঁকে ভোট দেওয়ার প্রশ্ন থেকে তাই পিছিয়ে আসতে পারেনি বহরমপুর।
জেলা তৃণমূলের এক নেতা ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘পঞ্চায়েতে নির্বাচনে ভোট দিতে না পারা মানুষের একাংশের ক্ষোভও ভোট হয়ে ফিরে এসেছে অধীরের বাক্সে। স্থানীয় সিপিএম নেতা-কর্মীদের পাওয়া, এমনকি রেজিনগর এলাকার কিছু বিজেপি কর্মীর প্রচ্ছন্ন মদতও অধীরের মার্জিন ধরে রাখতে সাহায্য করেছে।’’
প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘ওটাই আমাদের ওয়েসিস। দলের অন্দরে যতোই বিরোধীতা থাক না কেন, মেনে নিতেই হচ্ছে কংগ্রেসে অধীর চৌধুরীই এখন বাংলার মুখ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy