বিকিকিনি: ঘড়ির দোকানে ভিড়। নিজস্ব চিত্র
লালগোলার তামেজ আলি কোনও দিনই সকাল বেলায় দোকান খোলেন না। বেশ একটু দেরিই হয় তাঁর। তার পর সন্ধ্যা হতে না হতেই দোকানের ঝাঁপ ফেলে ফিরে যান শহরের উপান্তে নিজের বাড়িতে। কোনও দিন দু’শো কোনও দিন সাড়ে তিনশো— বিক্রির বহর এর মধ্যেই থমকে থাকে।
বলছেন, ‘‘হাত ঘড়ি বিক্রি হয় বটে তবে সেটা কালেভদ্রে, খদ্দেরদের বললেই জবাব পাই, ‘মোবাইল রয়েছে তো, আবার ঘড়ি!’’
বাজারে নতুন মডেলের ঘড়ি তাই শো-কেসেই ঝলমল করে। তামেজ আলির সেই দোকান মাধ্যমিক আর উচ্চ মাধ্যমিকের আগে চেহারা বদলে ফেলেছে। তামেজেরও দম নেওয়ার সময় নেই। বলছেন, ‘‘সারা দিনে দামী-সস্তা মিলিয়ে ন’খানা হাত ঘড়ি বেচলাম।’’ জিয়াগঞ্জের সৌমিত্র সাহার দোকানেও একইরকম ভিড়। সকাল সাতটায় দোকান খুলে বন্ধ করতে সেই দশটা। বলছেন, ‘‘কেউ না কেউ আসছেনই, ঘড়িও বিক্রি হচ্ছে ভালই।’’ নতুন করে জেগে উঠেছে শহরের আনাচ কানাচে ছড়িয়ে থাকা ঘড়ি সারাইয়ের দোকানগুলোতে। তাঁদেরই এক জন বলছেন, ‘‘অয়েলিং করে, ব্যান্ড বদলে সবাই পরীক্ষার আগে ঘড়িটা নতুন করে নিতে চাইছে যে!’’
এটাই রীতি। পুজোর আগে যেমন কাপড়জামা, বোর্ডের পরীক্ষার আগে আগে তেমনই ঘড়ির দোকানে ভিড় উপচে পড়ে। বহরমপুর থেকে কান্দি, খোঁজ নিলে তারই প্রমাণ মিলছে।
বহরমপুরের এক দোকানির কথায়, ‘‘হাতে ঘড়ি পড়ে পরীক্ষায় বসার একটা অন্য আমেজ আছে। যেন আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। অনেকেই তাঁদের ছেলে-মেয়েকে পরীক্ষার আগে ঘড়ি কিনে দিয়ে উৎসাহিত করতে চান। ফলে ঘড়ি বিক্রির সময় এটাই।’’ পরীক্ষার আবার কারও ঘড়ি কেনার পরই প্রশ্ন, "ও কাকু ঘড়ির টাইম ঠিক আছে তো, পরীক্ষা দিতে বসে সমস্যায় পড়ব না তো।"
বোর্ড পরীক্ষার আগে তাই হালে যেন পানি পেয়ে যান ঘড়ির দোকানিরা।
হালের মোবাইল-সংস্কৃতির দাপটে ঘড়ির চাহিদা পড়ে গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু পরীক্ষা হলে মোবাইল নিয়ে যাওয়ার প্রশ্ন নেই। তাই সাবেক ঘড়ি এ সময়ে দোকানিদের বল ভরসা জোগায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy