Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

ফরাক্কার লকগেটে বসবে ফিশ ল্যাডার

ওই লকগেট দু’টি সচল রেখে কীভাবে গঙ্গায় ইলিশের বিচরণ বাড়ানো যায়, তা খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি দিল্লি থেকে এক প্রতিনিধি দল ফরাক্কা ঘুরে গেল।

উপচে পড়ছে ইলিশ।  —ফাইল চিত্র।

উপচে পড়ছে ইলিশ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ফরাক্কা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৮ ০২:১৮
Share: Save:

দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে ফরাক্কা বাঁধের দু’টি লকগেট। গত কয়েক বছরে ফরাক্কার গঙ্গায় ইলিশের সংখ্যা কমার এটি অন্যতম কারণ বলে ধারণা মৎস্য বিশেষজ্ঞদের। ওই লকগেট দু’টি সচল রেখে কীভাবে গঙ্গায় ইলিশের বিচরণ বাড়ানো যায়, তা খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি দিল্লি থেকে এক প্রতিনিধি দল ফরাক্কা ঘুরে গেল।

বছর কয়েক আগেও বর্ষায় ফরাক্কায় অঢেল মিলত ইলিশ মাছ। বাসিন্দাদের মুখে মুখে ঘুরত বাড়িতে ইলিশের ঝাল, সর্ষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ খাওয়ার গল্প। সে দিন গিয়েছে। বড় ইলিশ তো কবেই পাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাজারে পাঁচশো-ছ’শো গ্রামের ইলিশের দামও আকাশছোঁয়া। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বাঁধের ২৫ ও ২৬ নম্বর লকগেট (মাছ ঢুকত বলে এই গেটের নাম ফিশ গেট) বন্ধ থাকার জন্যই ডাউন স্ট্রিম থেকে আপ স্ট্রিমে যেতে পারছে না ইলিশের ঝাঁক। তাতেই কমেছে ইলিশের জোগান।

বিষয়টি নিয়ে ‘ভাবিত’ ছিলেন ফরাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষও। তাঁদের অনুরোধে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রকের ছ’জন বিশেষজ্ঞ গত শুক্রবার ফরাক্কায় আসেন। বন্ধ লকগেট দু’টি খোলার উপায় খুঁজতে তাঁরা সেগুলি পরিদর্শন করেছেন। সঙ্গে ছিলেন ফরাক্কা বাঁধের জেনারেল ম্যানেজার শৈবাল ঘোষ। পরে তিনি বলেন, ‘‘ডাউন স্ট্রিম থেকে আপ স্ট্রিমে ইলিশের বিচরণ জরুরি। কিন্তু ওই গেট দু’টি অচল থাকায় তা হচ্ছে না। ইলিশের চলাচল অবাধ করতে পারলেই ফরাক্কায় ইলিশের জোগান বাড়বে। মৎস্যজীবীরাও এতে আর্থিক ভাবে উপকৃত হবেন। সে কারণে বিশেষজ্ঞদের ঘুরে দেখে যেতে অনুরোধ করা হয়েছিল।’’

প্রতিনিধি দলের সদস্যদের অন্যতম, কারিগরি বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় গন্দোয়াল বলেন, “ওই লকগেট দু’টি সচল করে সেখানে ফিশ ল্যাডার বসাতে হবে। তবে ইলিশের বিচরণ বাড়ানো যাবে।” এ কে সাউ নামে আরেকজনের কথায়, ‘‘২২ বছর ধরে ফিশ গেট দু’টি খোলা হয় না। এখন সেগুলি পুরোপুরি অকেজো হয়ে গিয়েছে। ইলিশ মাছ যাতায়াত করত দু’টি গেট দিয়ে। ফিশ ল্যাডার বসালে সমস্যা মিটে যাবে।’’ তবে কবে গেট দু’টি সংস্কারের কাজ শুরু হবে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি তাঁরা।

এদিকে, গঙ্গায় ইলিশের জোগান বাড়ানোর চেষ্টা শুরু হওয়ায় খুশির হাওয়া ফরাক্কায়। স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস বললেন, ‘‘বাবা-কাকার মুখে শোনা, আগে বর্ষার সময় ফরাক্কায় জলের দরে ইলিশ মিলত। বাড়িতে ইলিশ মাছের বিভিন্ন পদ খাওয়া হত। এখন সব অতীত। বাজারে বরফে রাখা ইলিশ মাছের দামও কিলোপ্রতি ৬০০ টাকা। ফিশ গেট দ্রুত সারানো হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hilsa Fish মাছ ইলিশ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE