হাসপাতালে রোগীর স্রোত অথচ তাঁর দেখা নেই।
অভিযোগটা নতুন নয়। সরকারি হাসপাতালে তাঁদের আসা-যাওয়ার হাল হকিকৎ খতিয়ে দেখে স্বাস্থ্যভবন টের পেয়েছিল— ক্রমেই তাঁদের অধিকাংশ হয়ে উঠছেন ডুমুরের ফুল।
নদিয়ার বিভিন্ন জেলা হাসপাতালও তার ব্যতিক্রম নয়। সোমবার, রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকের সিংহভাগ জুড়েই তাই জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের এই রোগের দাওয়াই নিয়েই আলোচনা হল। আলোচনায় তাঁদের উপস্থিতির প্রসঙ্গ ছাড়াও উঠে এল, সরকারি চিকিৎসকের একাংশের ‘নার্সিংহোমমুখী’ মনের কথা!
স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা এ দিন তাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সরকারি হাসপাতালের কোনও চিকিৎসক, হাসপাতালের কোনও রোগীকে বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে যাওয়ার জন্য প্ররোচিত করছেন জানতে পারলে তাঁর বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য ভবনে রিপোর্ট পাঠানো হবে। কোন ক্যানসার আক্রান্ত রোগীকে বাইরে চিকিৎসার জন্য উৎসাহিত করা হলে করা হবে ‘সর্বোচ্চ পদক্ষেপ’।
সোমবার দুপুর থেকে বিকেল— প্রায় ঘণ্টা তিনেকের বৈঠকে স্পষ্টতই ক্ষুব্ধ জেলাশাসক সুমিত গুপ্তকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘কোনও বেনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না।’’ ছিলেন, রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি, বিধায়ক উজ্বল বিশ্বাসও। তিনিও বলছেন, “আমরা পরিষ্কার বলে দিয়েছি, আর কোনওরকম গাফিলতি সহ্য করা হবে না।”
ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ডাক্তারদের ‘ফাঁকি’ রুখতে আউটডোর থেকে ইনডোর— সর্বত্র বসবে বায়োমেট্রিক হাজিরা, সিসি ক্যামেরা। রোগীর বাড়ির লোকেরা যাতে কোন চিকিৎসকের কখন ডিউটি, কখনই বা তাঁর রাউন্ড দেওয়ার সময়, জানতে পারেন, সে জন্য থাকবে রোস্টার। তবে, এই তৎপরতা অবশ্য নতুন নয়। আগেও একাধিকবার হাসপাতালের পরিষেবা ফিরিয়ে আনতে চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কর্তারা। শুধু তাই নয় সম্প্রতি জেলা পরিষদের সভাকক্ষে জলার বিধায়ক, জেলা পরিষদের সদস্য, সভাধিপতি ও স্বাস্থ্য কর্তারা সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। হাজিরা নিয়ে সতর্ক করা হলেও তা যে বিশেষ কাজে আসেনি, এ দিনের বৈঠকেই তা স্পষ্ট।
এ দিনের বৈঠকে, উঠে এল, আরও একটি জরুরি বিষয়, হাসপাতাল চত্বরে থাকা অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের দাপাদাপি। যার জেরে এ দিন স্পষ্ট করে দেওয়া হল, হাসপাতাল চত্বরে অ্যাম্বুল্যান্স রাখা বন্ধ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy