Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দু’বার ফেরাল হাসপাতাল, রাস্তায় মৃত্যু হল বালকের

পিং-পং বলের মতো এক বার হাসপাতাল আর এক বার বাড়ির মধ্যে যাতায়াত করতে-করতে রাস্তাতেই প্রাণ বেরিয়ে গিয়েছে ৮ বছরের সীমান্ত দাসের। ছেলের নিস্প্রাণ দেহের উপর লুটিয়ে পড়ে হাহাকার করে মা রত্না দাস বলেন, ‘‘ওরা কি আদৌ পড়াশোনা করে ডাক্তার হয়েছেন?’’ 

বিলাপ: সন্তানকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন মা। নিজস্ব চিত্র

বিলাপ: সন্তানকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন মা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪৮
Share: Save:

বার-বার তাকে নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে দৌড়েছেন বাবা-মা। অনুনয় করেছেন ভাল করে পরীক্ষা করে দেখতে। একটু-একটু করে তাঁদের কোলেই নেতিয়ে পড়েছে বালক। অথচ অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক নির্লিপ্ত ভাবেই জানিয়েছেন, ভর্তি করার দরকার নেই। বাড়িতে রেখে ওষুধ খাওয়ালেই সুস্থ হয়ে যাবে!

তা অবশ্য হয়নি। পিং-পং বলের মতো এক বার হাসপাতাল আর এক বার বাড়ির মধ্যে যাতায়াত করতে-করতে রাস্তাতেই প্রাণ বেরিয়ে গিয়েছে ৮ বছরের সীমান্ত দাসের। ছেলের নিস্প্রাণ দেহের উপর লুটিয়ে পড়ে হাহাকার করে মা রত্না দাস বলেন, ‘‘ওরা কি আদৌ পড়াশোনা করে ডাক্তার হয়েছেন?’’

শনিবার বিকেলে ওই ঘটনার পরে উত্তেজিত বাড়ির লোক কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এই ঘটনায় শিশুটির পরিবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে। হাসপাতাল সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “আমিও বুঝতে পারছি না এঁরা কেমন ডাক্তার যে, দু’জনে মিলেও বাচ্চা কতটা গুরুতর অসুস্থ তা ধরতে পারলেন না! তদন্ত কমিটি বসিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” অভিযুক্ত দুই চিকিৎসককে ফোনে বার বার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

মৃত সীমান্ত দাসের বাড়ি হাঁসখালির গোবিন্দপুরে। দিন তিনেক আগে তার জ্বর আসে। মা রত্না দাসের অভিযোগ, “স্থানীয় এক ডাক্তার ছেলেকে দেখে বলেন, অবস্থা ভাল নয়। হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। সেই মতো রাতেই সদর হাসপাতালে যাই। জরুরি বিভাগে ডিউটি করছিলেন পীযুষকান্তি পাল। তিনি পরীক্ষা করে জানিয়ে দেন, ভর্তির দরকার নেই।” তাঁরা অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু শেষ রাতে সীমান্ত আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। সকালে তাকে আবার গাড়ি করে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। জরুরি বিভাগ থেকে পাঠনো হয় বহির্বিভাগে। সেখানে ছিলেন মানবেশ্বর পাল।

রত্নার অভিযোগ, “মানবেশ্বর পাল তখন বলেন, রাতে যখন ভর্তি করা হয়নি তখন আর ভর্তি করে লাভ নেই। তিনি বাড়ি পাঠিয়ে দেন।” বাড়ি যাওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই সীমান্ত ফের অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে আগে পথেই সে মারা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Medical Negligence Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE