Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পুকুরে মিলল বন্দুক ও গুলি

খুনি নিজে বা খুনের ব্যাপারে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত কেউ ‘ক্লু’ না-দিলে পুলিশের পক্ষে পুকুরের নীচে আগ্নেয়াস্ত্র থাকার কথা জানা সম্ভব নয়, এ কথা সকলেই মানছেন।

এই পুকুরে উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্র। নিজস্ব চিত্র

এই পুকুরে উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্র। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৩৩
Share: Save:

শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক কুমুদরঞ্জন বিশ্বাসের সঙ্গী কার্তিক বিশ্বাসের খুনের রহস্য সমাধানের একেবারে দোরগো়ড়ায় পৌঁছে গিয়েছে পুলিশ। রবিবার ভোর রাতে কৃষ্ণনগরের এক পুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছে ওই খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র।

খুনি নিজে বা খুনের ব্যাপারে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত কেউ ‘ক্লু’ না-দিলে পুলিশের পক্ষে পুকুরের নীচে আগ্নেয়াস্ত্র থাকার কথা জানা সম্ভব নয়, এ কথা সকলেই মানছেন। এর দু’টি অর্থ হয়। এক, খুনির সন্ধান মিলেছে। দুই, খুনের অন্যতম ষড়যন্ত্রী বা পান্ডা পুলিশের কব্জায় এসেছে।

শনিবার রাতেই পুলিশ কৃষ্ণনগরের রাধানগরে চ্যাটার্জি পুকুর ঘিরে ফেলে। ডুবুরি নামানো হয় রবিবার ভোর রাতে। তাঁরাই খুঁজে পান প্যাকেটটা। তার ভিতরে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র আর গুলি।

বিষয়টি জানাজানি হতেই মূল আততায়ীর ধরা পড়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। যদিও বিষয়টিতে মুখে কুলুপ এঁটে আছেন জেলার পুলিশকর্তারা। বহু চেষ্টা সত্ত্বেও নদিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার ফোন ধরেননি। তবে পুলিশের অন্য একটি সূত্রের দাবি, খুনি পুলিশের প্রায় নাগালের মধ্যে। পুলিশ আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না বলেই প্রকাশ্যে কিছু বলছে না। ভিতরে-ভিতরে তদন্তকে একেবারে শেষ পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে যাচ্ছে তারা।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে চিকিৎসক কুমুদরঞ্জন বিশ্বাসের বাড়ির সামনে তাঁর উপস্থিতিতেই খুন হন কার্তিক বিশ্বাস। সিসিটিভি ফুটেজে হেলমেট পরা আততায়ীকে দেখা গিয়েছে। তদন্তকারীদের একটা অংশের দাবি, জেলারই এক পুরনো পেশাদার অপরাধী কার্তিক খুনে ‘শুটার’ -এর কাজ করেছিল। আদতে সে বাংলাদশের বাসিন্দা ছিল। বেশ কয়েক বছর আগে ভারতে এসে তোহট্টের হাওলিয়া মোড়ে থাকতে শুরু করে। শান্তিপুর, চাপড়া, চাকদহতেও সে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ছিল। গত দু’দিন ধরেই তৎপরতা তুঙ্গে কোতোয়ালি থানায়। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, জাল অনেকটাই গুটিয়ে আনা গিয়েছে।

এই মামলার প্রায় গোড়া থেকেই তদন্তের কাজে যুক্ত রয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) আমনদীপ, স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের (এসওজি) ওসি অরিন্দম সেন এবং তদন্তকারী অফিসার হেমন্ত অধিকারী। কার্তিকের খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে ওষুধের দালাল সাগর নাথ ওরফে বাবন এবং ওষুধের স্টকিস্ট পিন্টু ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দু’জনেই আপাতত পুলিশ হেফাজতে।

কিন্তু যত ক্ষণ না মূল আততায়ী ধরা পড়ছে, পুলিশের স্বস্তি নেই। কেন না এতগুলো দিন কেটে যাওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জেলা জুড়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মোটা টাকা দিয়ে মামলা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, এমন সন্দেহের কথাও জানিয়েছে কার্তিকের পরিবার। ফলে, যে ভাবে হোক খুনিকে ধরতে না পারলে যে পুলিশের ভাবমূর্তি রক্ষা করা যে শক্ত হবে, তাতে সন্দেহ নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Gun Bullet Pond
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE