Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মাফিয়াদের থেকে টাকা নিয়ে বিপাক

আনন্দবাজারে মঙ্গলবারের কাগজে মিল্টনের কথা প্রকাশিত হওয়ার পরেই প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছিল।

মাটি পাচার। নিজস্ব চিত্র

মাটি পাচার। নিজস্ব চিত্র

মনিরুল শেখ
হরিণঘাটা শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৪২
Share: Save:

জোর গলায় সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি জানিয়েছিলেন, দলীয় তহবিল ভরাতে হরিণঘাটার কাষ্ঠডাঙা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সাত শিমুলিয়ায় তিনি মাটি মাফিয়াদের থেকে টাকা নিয়ে অবৈধ ভাবে মাটি কাটায় মদত দিচ্ছেন। তৃণমূলের সেই স্থানীয় নেতা মিল্টন সরকারকে মঙ্গলবার শো-কজ করেছে দল।

আনন্দবাজারে মঙ্গলবারের কাগজে মিল্টনের কথা প্রকাশিত হওয়ার পরেই প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছিল। ব্লক তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘মিল্টন এক সময় পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। এখন ওঁর স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্য। কিন্তু মিল্টন তো আর সরকারি আধিকারিক নন যে, মাটি কাটার অনুমতি দেবেন। তা ছাড়া তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্ব মাটি মাফিয়াদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দলের তবহিল ভরানোর কোনও নির্দেশও ওকে দেয়নি।’’ মিল্টনের মন্তব্যে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে এবং নেতারা অস্বস্তিতে পড়েছেন বলে খবর।

মঙ্গলবার ব্লক তৃণমূলের সভাপতি চঞ্চল দেবনাথ মিল্টনকে ডেকে পাঠান। সেখানে মাটি কাটার টাকা নেওয়ার বিষয়ে মিল্টনকে প্রশ্ন করা হয়। দলীয় সূত্রের খবর, মিল্টন কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। চঞ্চল দেবনাথ বলেন, ‘‘মিল্টনকে শো-কজ করা হয়েছে। কেন তিনি অবৈধ মাটি কাটায় মদত দিয়েছিলেন, তা তিন দিনের মধ্যে জানাতে হবে। উত্তর সন্তোষজনক না হলে ওঁকে দল থেকে বরখাস্ত করা হবে।’’ আর মিল্টন এ দিন বলছেন, ‘‘আমি বেকায়দায় রয়েছি। দল যা পদক্ষেপ করবে তা মেনে নিতে হবে।’’ এলাকার তৃণমূল নেতাদের একাংশ জানাচ্ছেন, মিল্টন ও তাঁর শাগরেদরা নানারকম অনিয়ম করে বেড়ান। দলের অনেকের বিরোধিতা সত্ত্বেও ওঁরা টাকার বিনিময়ে মাটি কাটায় মদত দেওয়ার কারবার চালাচ্ছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকেই সাত শিমুলিয়ায় মাটি কাটা বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের গনেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘দল যে মাফিয়াদের প্রশয় দেয় না, এই ঘটনাতেই প্রমাণ হয়ে গেল। নিয়মের বাইরে গেলে শাস্তি পেতেই হবে।’’

সাতশিমুলিয়া গ্রামে অসীম ভট্ট বহু দিন ধরেই আন্দামানে থাকেন। তিনি গ্রামে তাঁর ৭৬৪ দাগের তিন ফসলি জমিতে পুকুর কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা শুকদেব সরকার নামে এক জন ওই মাটি কিনেছিলেন বলে এলাকার লোক জানিয়েছেন। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। শুকদেব সোমবার নির্লিপ্ত গলায় বলেছিলেন, ‘‘এলাকার শাসক দলের নেতাদের টাকা দিয়ে মাটি কাটছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Haringhata TMC Extortion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE