Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
আলোচনায় সামিল মন্ত্রীও

বিয়ে কি হচ্ছে বন্ধ, প্রশ্ন খোদ জেলাশাসকের

রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগ এবং জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের কর্তাদের সামনেই জেলাশাসকের এমন মন্তব্য অস্বস্তিতে ফেলল বিভাগীয় মন্ত্রী শশী পাঁজাকেও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫২
Share: Save:

অনুষ্ঠানটা বন্ধ করে দেওয়া গিয়েছিল। কিন্তু বিয়েটা?

নাবালিকা বিয়ে রোখার সরকারি তারিফটুকু অনেকটাই ফিকে হয়ে গেল মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলাগানাথনের মন্তব্যে।

প্রান্তিক জেলা মুর্শিদাবাদ কিংবা লাগোয়া নদিয়ায়, একের পর এক বাল্য বিয়ে রোখার ঘটনা ঘটলেও, আদপে তা যে নিছকই অনুষ্ঠানের সাময়িক বিরতি, মঙ্গলবার জেলাশাসকের কতায় তা অনেকটাই প্রকাশ্যে চলে এল। নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের আয়োজিত দু’দিনের কর্মশালায় মন্ত্রীর সামনেই উলাগা বলছেন, “বিডিওরা নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করছেন ঠিকই, কিন্তু দু’চার দিন পরে ফের সেই নাবালিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। এমন ঘটনা আমাদের নজরে এসেছে।” চলতি বছরে মুর্শিদাবাদ জেলায় ২১৬ জন নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করা হলেও তা নিয়ে তাই রয়ে গেল একগুচ্ছ সংশয়।

রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগ এবং জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের কর্তাদের সামনেই জেলাশাসকের এমন মন্তব্য অস্বস্তিতে ফেলল বিভাগীয় মন্ত্রী শশী পাঁজাকেও।

তবে, আর নয়। উলাগা জানাচ্ছেন, এ বার সার্বিক ভাবেই ঝাঁপাবে তাঁর প্রশাসন। আগামী এক বছরের মধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলাকে বাল্যবিবাহ মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হবে যে কোনও মূল্যে।

জেলার ২৬টি ব্লকে একটি করে কন্যাশ্রী যোদ্ধার দল আছে। আগামী দিনে ২৫০ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে এলাকাতেই তাদের ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানাচ্ছেন তিনি। সচেতন করার প্রাথমিক হাতিয়ার হবে তারাই।

সোম এবং মঙ্গলবার বহরমপুরে রবীন্দ্র সদনে শিশু শ্রম ও বাল্য বিবাহ রোধে দুই দিনাজপুর, মালদহ, বীরভূম, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে। মঙ্গলবার মূলত বাল্যবিবাহ রোধে আলোচনা হয়েছে। এ দিনের আলোচনাসভায় রাজ্যের দুই মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং জাকির হোসেন ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের চেয়ারম্যান অনন্যা চক্রবর্তী-সহ ছয় সদস্য, জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের সদস্য রুপা কাপুর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘‘বাল্যবিবাহ বেআইনি জানা সত্ত্বেও কম বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।। যার ফলে বয়ঃসন্ধির আগেই অনেক সময়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছে তারা।’’

নাবালিকা বিয়ে রুখতে কন্যাশ্রী মেয়েরাও য়ে বড় ভরসা তা মনে করিয়ে দিচ্ছেন জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের সদস্য রূপা কাপুরও। বলছেন, ‘‘কন্যাশ্রী মেয়েরা এ ব্যাপারে বড় ভরসা। এমনকী এ কাজে ছেলেদের যুক্ত করাও উচিৎ।’’

সেই সঙ্গে, জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগ নাবালিকা বিয়ে বন্ধে দেশজুড়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে বলে তাঁর দাবি। ইতিমধ্যে ঝাড়খন্ড, অসম, উত্তরপ্রদেশে পঞ্চায়েতে সদস্যদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। জানুয়ারি মাস থেকে এ রাজ্যেও পঞ্চায়েতের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE