Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সেই ভয় এখনও পিছু ছাড়েনি হাসপাতালের

হাসপাতালের কর্তারা অবশ্য বলছেন, ‘‘ভয়ের কিছু নেই। কোনও কারণে আগুন লাগলে, নিভিয়ে ফেলার মনত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে হাসপাতালে।’’

ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে গোটা মেডিক্যাল কলেজ।—ফাইল চিত্র

ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে গোটা মেডিক্যাল কলেজ।—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
লালবাগ শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:২৫
Share: Save:

বাগড়ি মার্কেটের আগুন থিতিয়ে যাওয়ার আগেই ছড়িয়েছিল কলকাতার মেডিক্যাল কলেজে, আর সেই উত্তাপের আঁচ ছড়িয়েছে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে। লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে ঢুঁ মারলেই সেই আঁচ টের পাওয়া পাওয়া যাচ্ছে! হাসপাতালের কর্তারা অবশ্য বলছেন, ‘‘ভয়ের কিছু নেই। কোনও কারণে আগুন লাগলে, নিভিয়ে ফেলার মত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে হাসপাতালে।’’

কিন্তু সেই অভয়ের অন্দরে পা রাখলেই মালুম হচ্ছে ভয়টা কোনও ভাবেই অমূলক নয়! ২০১৭ সালের এপ্রিলে অক্সিজেনের সিলিন্ডার তীব্র আওয়াজে ফেটে যে আতঙ্ক তৈরি করেছিল, তা এখনও দগদগে। যদিও ‘ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম’-এ মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা হাসপাতাল। বিভিন্ন ওয়ার্ডের দেওয়াল থেকে ঝুলছে ‘ফায়ার এক্সটিঙ্গুইসারও’। কিন্তু আচমকা আগুন লাগলে ফায়ার এক্সটিঙ্গুইসার চালাবে কে? কর্মীর অভাব রয়েছে। হাসপাতালে দেখা মেলেনি ফায়ার অ্যালার্মের।

ফলে কোনও ওয়ার্ডে আগুন লাগলে অন্যত্র সজাগ হওয়ার সুয়োগ নেই বললেই চলে। বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজে অগ্নিকাণ্ডের পরে স্বাস্থ্যকর্তাদের একের পর এক বৈঠক হয়। বলা হয়, জেলার সব হাসপাতালেই জলের লাইন পৌঁছে দেওয়া হবে। তীব্র গতিতে জল ছিটকে নিভিয়ে দেওয়া দেবে আগুন। কিন্তু সচেতন নন যেমন রোগী ও রোগীরা বাড়ির লোকজন, তেমনি সতর্ক নন স্বাস্থ্যকর্তারাও। নজরদারির অভাব রয়েছে হাসপাতাল জুড়ে। পুরুষ ও মহিলা বিভাগের দেওয়াল থেকে ঝুলছে বিদ্যুতের তার, কোথাও আবার রোগীর বেডের তলায় জ্বলছে মশা তাড়ানোর কয়েল।

লালবাগ মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে কোনও বড় জলাধার নেই, দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছলেও জলের জন্য বসে বসে থাকা ছাড়া গতি নেই। সেই ‘নেই’য়ের তালিকায় রয়েছে আরও অনেক কিছু, আপতকালিন সিঁড়ি, পুরনো বিদ্যুতের তারে নিময়িত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, এমনকি বালি ভর্তি বালতি, নাহ্, তাও নেই। আর নেই বলেই গত বছর অক্সিজেন সিলিন্ডার ফেটে যাওয়ার কথা মনে পড়লেই চমকে ওঠেন রানিতলার সাহাবুদ্দিন শেখ।লালবাগের ওই হাসপাতালে আচমকা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে বাঁচার উপায় কী, তা অবশ্য জানা নেই মন্দিরা ঘোষের। তিনি বলছেন, ‘‘হাসপাতালের নিচু তলায় আগুন লাগলে কোনটা দিয়ে বেরিয়ে বাইরে বের হব, তার কিছুই জানি না।’’

লালবাগ মহকুমা হাসপাতালের সুপার অভিজিৎ দেওধরিয়া বলছেন, ‘‘গোটা হাসপাতালে বসানো হয়েছে ওভার হেড জলের লাইন। কোনও কারনে কোথাও একটু ধোঁয়া বের হলেই নিজে থেকেই পাইপ থেকে জল বেরিয়ে নিভিয়ে দেবে আগুন। এছাড়াও প্রতিটি বিভাগে রয়েছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও।’’ লালবাগ অগ্নিনির্বাপন কেন্দ্রের আধিকারিক গোবিন্দ রায় বলেন, ‘‘তবে আগুন নেভানোর ব্যাপারে হাসপাতালের কর্মীদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE