Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ধাক্কা সামলানো চাট্টিখানি কথা!

তিন বছরের ব্যবধানে সে টাকা সাদা হয়ে সরকারের তেজরিতে কত ফিরল তা নিয়ে চাপা জল্পনার পাশাপাশি মেজ-সেজ ব্যবসায়ী থেকে ছোট উদ্যোগপতি, উপকৃত হলেন কতটা, তারই খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে— কপালে সেই তিন বছরের পুরনো ভাঁজটা এখনও রয়ে গিয়েছে।  

তিন বছর আগে নোটবন্দির দিনযাপন। ব্যাঙ্কের সামনে দীর্ঘ লাইন। ফাইল চিত্র

তিন বছর আগে নোটবন্দির দিনযাপন। ব্যাঙ্কের সামনে দীর্ঘ লাইন। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৮
Share: Save:

চেহারাটা বদলে গিয়েছিল এক রাতেই। আটপৌরে ব্যবসায়ীর কপালে ভাঁজ, ব্যাঙ্কের সামনে আঁকাবাঁকা সর্পিল লাইন, টাকা তোলা আর পুরনো নোট জমা দেওয়ার হিড়িক। বার্তা ছিল— কালো টাকা বাজেয়াপ্ত করার মোক্ষম উপায়!

তিন বছরের ব্যবধানে সে টাকা সাদা হয়ে সরকারের তেজরিতে কত ফিরল তা নিয়ে চাপা জল্পনার পাশাপাশি মেজ-সেজ ব্যবসায়ী থেকে ছোট উদ্যোগপতি, উপকৃত হলেন কতটা, তারই খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে— কপালে সেই তিন বছরের পুরনো ভাঁজটা এখনও রয়ে গিয়েছে। মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্সের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘নোট বাতিলের পর সব থেকে বেশি চাপে পড়েছিলাম আমরা। বাজারে নগদ নোটের জোগান কমের কারণে কেনা-বেচা শিকেয় উঠেছিল। নোট বাতিলের চাপ কাটিয়ে ওঠার আগেই গাড়ে এসে পড়ল জিএসটি’র থাবা। ফলে সে ভার এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি।’’

তাঁর দাবি, জেলার ছোট ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেশি। সেখানে ছোট নোটের জোগান তুলনায় কম। বরং লোকজনের হাতে হাতে দু’হাজার টাকার নোট ঘুরছে। কেনা বেচায় সমস্যা তাই কাটেনি।

লালবাগের এক মাঝারি মাপের ব্যবসায়ী বলছেন, ‘‘নোট বাতিলের ধাক্কা সামলে ওঠা কি চাট্টিখানি কথা! নোট বাতিলের পর দু’হাজার টাকার নোট বাজারে আসতেই জাল নোটের রমরমা বেড়েছে। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া মুর্শিদাবাদের লোকজন জালনোটের ভয়ে দু’হাজার টাকার নোট আর নিতেই চান না।’’

বহরমপুর ক্লথ মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্তী আরও চাঁচাছোলা, বলছেন ‘‘নোট বাতিলের ফলে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছিল। কৃষক থেকে ব্যবসায়ী কাজ ফেলে ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়য়েছিলেন। সে সময় যে ক্ষতি হয়েছিল তা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি কেউই।’’

তাঁর দাবি, আগে বাজারে যে চাহিদা ছিল এখন তা নেই। বাজারে ছোট নোটের জোগান কম রয়েছে। দু’হাজার টাকার নোট নিয়ে লোকজন বাজারে আসছেন। সেই টাকা খুচরো দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন ব্যবসায়ীরা।

সমস্যা রয়েছে সাধারণের মধ্যেও, হরিহরপাড়ার বাসিন্দা জাকির শেখ বলছেন, ‘‘এটিএমে গিয়ে কার্ড ঢোকালেই দু’হাজার টাকার নোট। গৃহস্থালির জিনিসপত্র কেনাকাটি করব কি করে!’’

মুর্শিদাবাদের লিড ব্যাঙ্কের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার দেবব্রত সাম অবশ্য বলছেন, ‘‘ছোট নোটের জোগান নেই তা নয়। তবে এটিএমে বেশি সংখ্যক টাকা দেওয়ার জন্য ছোট নোটের তুলনায় বড় নোট দেওয়া হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

demonetization
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE