হরিণ দেখতে থানায় ভিড়। হরিহরপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
খাঁকি উর্দির চৌহদ্দি জুড়ে যে এমন সান্ধ্য মেলার চেহারা নিতে পারে, ইদের বিকেল থেকে হরিহরপাড়া থানা চত্বরে পা না রাখলে সেই নব্য অভিজ্ঞতা ফিকে হয়ে যেত।
জিলিপি থেকে সদ্য ভাজা পাঁপড়ের গন্ধ, খাঁচার গায়ে চোখ লাগিয়ে হরিণ-দর্শন আর দেবদারুর ছায়ায় দু’দন্ড বিশ্রাম। মুর্শিদাবাদের এই মডেল থানায় ইদ-ঝুলনের এই অঘোষিত মেলাটা গ্রামীণ জীবনে একটা নতুন উৎসবস্থল হয়ে উঠেছে।
ইদ গিয়েছে সোমবার। থানা-মেলার রেশ রয়ে গিয়েছে মঙ্গলবার বিকেলেও। পুলিশ জানাচ্ছে, আপাতত সাতটা দিন থানার চেহারাটাই আদ্যন্ত এমনই থাকবে। থানা চত্বরে এমন অনাবিল উৎসহের চেহারা, শুধু রাজ্য়ে নয়, দেশেও বিরল।
হরিহরপাড়া থানা চত্বরটি আদতে ছিল নীলকুঠি। একসময় নীলকর সাহেবেরা সেখানে বসবাস করতেন। থানার প্রবেশ পথের ডান দিকেই রয়েছে শিশু উদ্যান। থানা ভবনের সামনেই হরিণ বাগান। ছোট-বড় মিলিয়ে হরিণের সংখ্যা খান পঁয়ত্রিশ। বিস্তীর্ণ খেলার মাঠ। ছাব্বিশ বিঘা জমিতে থানা যেন আদতে এক মুক্তাঙ্গন।
হরিহরপাড়া থানার চেহারাটা বদলে দিয়েছে লাগোয়া চন্দ্রদ্বীপ হরিন বাগান। অনেকেই দুপুর থেকে থানায় ঘুরঘুর করে স্রেফ হরিণের খোঁজে। খাঁচার ও পাশে তারা এ পাড়ে সেলফি তোলার হিড়িক। হরিণদের সঙ্গে নিজস্বী তোলার হালের ফ্যাশনে অবশ্য বন দফতরের কড়াকড়ি রয়েছে। তবে এ ক’দিন আর সে অনুশাসন মানছে কে! বাগানের সামনে ভিড় সামাল দিতে ব্যস্ত পুলিশ। সঙ্গে রয়েছে সোহরাবুদ্দিন। একদা এলাকার ত্রাশ সোহরাব এখন অতীত ভুলে হরিণ পালন করে ‘বাল্মীকি’ হয়েছে। বলছেন, ‘‘এই কটা দিন ভিড় বড্ড বেশি হয়। এত মানুষজন দেখে হরিণেরাও কাছে ঘেঁষতে চায় না। আমিই তাদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে জঙ্গল থেকে বের করে আনি। তবে হরিণদের বাইরের খাবার দেওয়া একেবারে বারণ। সে দিকে সব সময় খেয়াল রাখতে হয়।’’
হরিহরপাড়া থানার ওসি আব্দুস সালাম শেখ বলেন, ‘‘পুজোর সময় যেমন মন্ডপ ঘুরে ঠাকুর দেখা ইদে তেমনি থানা চত্বরে হরিণ দর্শন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy