Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কৃত্রিম ফুলের চাহিদা আছে, তবে লাভ নেই

আসল ফুলের বদলে বিভিন্ন জায়গায় কৃত্রিম ফুলের কদর বাড়ছে। নদিয়ার শান্তিপুরের শিল্পীদের প্লাস্টিক এবং কাপড় দিয়ে তৈরি কৃত্রিম ফুলের চাহিদা বেড়েছে। তাঁরা কৃত্রিম ফুলের তোড়া তৈরি করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন।

নকলনবিশ: ব্যবসায় লাভ নেই। নিজস্ব  চিত্র

নকলনবিশ: ব্যবসায় লাভ নেই। নিজস্ব  চিত্র

সম্রাট চন্দ
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:৫০
Share: Save:

গোলাপকে যে নামেই ডাকা হোক না কেন, সে গোলাপই।

আসল ফুলের বদলে বিভিন্ন জায়গায় কৃত্রিম ফুলের কদর বাড়ছে। নদিয়ার শান্তিপুরের শিল্পীদের প্লাস্টিক এবং কাপড় দিয়ে তৈরি কৃত্রিম ফুলের চাহিদা বেড়েছে। তাঁরা কৃত্রিম ফুলের তোড়া তৈরি করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন।

কাপড়, প্লাস্টিক ইত্যাদি দিয়ে তৈরি হচ্ছে রং-বেরঙের বাহারি ফুল। আর সেই ফুলই অনুষ্ঠান বাড়ি, মণ্ডপসজ্জা, এমনকি, গৃহস্থের বাড়িতেও শোভা পাচ্ছে। শান্তিপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পাবনা কলোনি, পাশের বাবলা পঞ্চায়েত এলাকার রাজাপুকুর, খাবরাডাঙা-সহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ বর্তমানে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত।বর্তমানে বিভিন্ন জায়গা থেকে ফেরিওয়ালা এবং ব্যবসায়ীরা এসে শিল্পীদের তৈরি করা এই কৃত্রিম ফুল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন শান্তিপুর থেকে। চাহিদা যে আগের চেয়ে বেড়েছে, তা বলছেন এখানকার শিল্পীরাই। তাঁদের কথায়, ‘‘বিক্রি বাড়লেও লাভ কমছে এই শিল্পে। কারণ, কাচামালের দাম যে অনুপাতে বৃদ্ধি পেয়েছে, উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সেই অনুপাতে বাড়েনি।’’ মূল কাচামাল সার্টিনের কাপড় কয়েক বছর আগেও শিল্পীরা কিনতেন ২৬০ টাকা কেজি দরে। সেই কাপড়ের দামই এখন দাঁড়িয়েছে ৩৬০ টাকা কেজি।

কিন্তু তাঁদের তৈরী করা ফুলের তোড়ার পাইকারি দর বাড়ছে না। ফলে, ক্ষতির মুখে পড়ছেন শিল্পীরা। তাঁদের থেকে জানা গেল, কয়েক বছর আগে যেমন ছিল ১৩ টাকা পিস, আজও দাম একই। পাবনা কলোনির শিল্পী উত্তম দাস বলছেন, “১৬ বছর ধরে আমি এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। সময়ের তুলনায় আজকের দিনে কৃত্রিম ফুলের চাহিদা বেড়েছে। বিক্রিও বেড়েছে। কিন্তু লাভ বাড়েনি।’’ তাঁর আক্ষেপ, কাচামালের দাম বাড়ছে, কিন্তু উৎপাদিত জিনিসের দাম বাড়াতে পারছেন না। তা হলেই ক্রেতা বিমুখ হচ্ছেন। লাভ কমলেও এখনও এখানকার শিল্পীরা এই পেশাকে ধরে রেখেছেন। কৃত্রিম ফুল তৈরির পাশাপাশি তাঁরা অনেকেই অন্য পেশার সঙ্গেও যুক্ত। কেউ চাষবাস, তাঁতশিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আবার, আয় বাড়াতে পরিবারের মহিলারাও এই কাজ করছেন। জানা গেল, প্রতি ১০০ পিস ফুল তৈরি করলে শ্রমিকেরা পান ২৫ টাকা। রাজাপুকুরের বাসিন্দা মহাদেব মুণ্ডা যেমন বলছেন, “যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। ফলে, এর পাশাপাশি অন্য পেশাকেও বেছে নিতে হয়েছে। এক ফাঁকে ফুল তৈরির কাজ করি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Artificial Flowers Shantipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE