Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
শিবির মুর্শিদাবাদ পুরসভায়

কে খেয়েছে কাটমানি?

বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড থেকে বেশ কয়েক জন কাউন্সিলরের অনুগামী থেকে একশ্রেণির দালাল, যারা শাসক দলের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে টাকা চাওয়ার অভিযোগও উঠেছিল।

 শিবিরে পুরপ্রধান।  নিজস্ব চিত্র

শিবিরে পুরপ্রধান। নিজস্ব চিত্র

শুভাশিস সৈয়দ
শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৯ ০০:০৪
Share: Save:

‘কাটমানি’র ছোঁয়া যেন গায়ে না লাগে! তাই শিবির করে কাউন্সিলর ও উপভোক্তাদের মুখোমুখি বসিয়ে দিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের পুরপ্রধান। ‘সকলের জন্য আবাস গৃহ’ প্রকল্পে কাউন্সিলরেরা কেউ কি কোনও কাটমানি নিয়েছেন বলে উপভোক্তাদের প্রশ্নও করা হয় মঞ্চ থেকে। কিন্তু ভয়ে হোক বা অন্য কোনও চাপে, উপভোক্তাদের কোনও হাত ওঠেনি। যদিও মঞ্চের নীচে চেয়ারে বসে থাকা উপভোক্তারা নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়া-চাওয়ি করেছেন, কিন্তু সরাসরি টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেননি কেউ-ই। গত ২২-২৪ জুন, মুর্শিদাবাদ পুরসভার রবীন্দ্র-নজরুল মঞ্চে ১৬টি ওয়ার্ডের উপভোক্তা ও কাউন্সিলরদের নিয়ে তিন দিনের শিবির হয়েছিল।

মুর্শিদাবাদের পুরপ্রধান তৃণমূলের বিপ্লব চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘সরকারি ওই প্রকল্পের উপভোক্তা ও কাউন্সিলরদের মুখোমুখি বসিয়ে দিয়েছিলাম। টাকা চাওয়ার অভিযোগ থাকলে মাইক্রোফোন হাতে সরাসরি জানানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কেউ কোনও অভিযোগ করেননি।’’

মুর্শিদাবাদ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে প্রকল্প চালু রয়েছে ওই পুরসভা-এলাকায়। ২০১৫-১৬ সালে ৯৬৩ জন, ২০১৬-১৭ সালে ৯০০, ২০১৭-১৮ সালে ১১৫০ এবং ২০১৮-১৯ সালে ৫০০ জন গরিবের নাম রয়েছে ওই প্রকল্পে। ২০১৫-১৬ সালে যাঁরা ঘর পেয়েছেন, তাঁরা ২ লক্ষ ৯৫ হাজার করে পেয়েছেন। যদিও তাঁদের শেষ কিস্তির টাকা এখনও বাকি রয়েছে। ২০১৬-১৭ সালের উপভোক্তাদের প্রথম কিস্তিতে ৪০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি করার জন্য ইট কেনার রশিদ জমা দিলে তাঁরা দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাবেন এবং ২০১৭-১৮ সালের উপভোক্তাদের নামে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ চলছে।

পুরপ্রধান বলছেন, ‘‘এর আগে ২০১৫ সালে সকলের জন্য আবাস গৃহ প্রকল্পে সকলের তো এক সঙ্গে ঘর হবে না। কারণ সরকারের নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কিন্তু সকলেই ঘর পেতে চাইবেন। ফলে সেখানে ঘর পাওয়ার তালিকায় নাম নথিবদ্ধ করা নিয়ে প্রতিয়োগিতা চলবে। এতে দু’পক্ষই দুর্নীতির আশ্রয় নিতে পারেন আশঙ্কা থেকে তখনই প্রতিটি ওয়ার্ডে মাইকে প্রচার করা থেকে লিফলেট বিলি করে সচেতন করেছিলাম উপভোক্তাদের। এমনকি নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে ওই প্রকল্পে কেই কোনও টাকা চাইলে সরাসরি অভিযোগ জানানোর কথা বলেছিলাম।’’

সেই মতো বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড থেকে বেশ কয়েক জন কাউন্সিলরের অনুগামী থেকে একশ্রেণির দালাল, যারা শাসক দলের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে টাকা চাওয়ার অভিযোগও উঠেছিল। পুরপ্রধান জানান, তখন দু’পক্ষকে বসিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছে, এখন ওই শিবির করার প্রয়োজন হল কেন? বিপ্লব চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘এখন মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি প্রসঙ্গ তোলায় নতুন করে শিবির করে বিষয়টি স্পষ্ট করে দিতে চেয়েছি। কাটমানি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কথা বলছেন। কিন্তু আমরা ২০১৫ সালেই বুঝতে পেরেছিলাম এই ঘর পাইয়ে দেওয়া নিয়ে দুর্নীতি হতে পারে। তাই এ বার কাউন্সিলর ও উপভোক্তাদের মুখোমুখি বসিয়ে ওই প্রকল্পে কোনও দুর্নীতি হয়েছে কিনা, তা জেনে নিতে চেয়েছি, যাতে পুরসভার গায়ে দুর্নীতির কোনও আঁচ না লাগে।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murshidabad Bribe TMC BJP CPM Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE