ছেলের জন্য চিন্তায় মন্টু শেখ। নিজস্ব চিত্র
সহজে ঘুম আসে না এখন রাতে।
কারও ছেলে, কারও স্বামী সীমান্তে জওয়ানের দায়িত্ব পালন করছেন। লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরে এলেও, তাঁরা তো আর ফেরেননি। এমনিতেই চিন্তা রয়েছে, এই করোনাভাইরাসের আবহে কেমন আছেন, কী খাচ্ছেন! তার উপরে যোগ হয়েছে সীমান্তের যুদ্ধের উত্তেজনা। লাদাখে চিনের আক্রমণের কথা শুনেছেন মুর্শিদাবাদের গ্রামের মানুষ। কিন্তু তাঁরা জানেন না, কতটা সত্যি! তবে এ টুকু জানেন, অনেক দূরের সেই সব এলাকায় যদি যুদ্ধে যেতে হয়, তা হলে কত বিপদ অপেক্ষা করে রয়েছে!
গ্রামের পাড়ার ঠেক, চায়ের দোকানের মাচা সব জায়গাতেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু লাদাখের সংঘর্ষ ও গ্রামের জওয়ানদের কথা। হরিহরপাড়া নওদার একাধিক জওয়ান কর্মরত রয়েছেন লাদাখে। পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত আছেন বহু সেনা জওয়ান। তাঁরা কেউ রয়েছেন সেনাবাহিনীতে, কেউ আবার আধা-সেনায়। একদিকে লাদাখে কর্মরত জওয়ানদের পরিবারের লোকেরা যেমন উদ্বিগ্ন, অপরদিকে জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত জওয়ানদের পরিবারের লোকেরাও উদ্বিগ্ন। জওয়ানদের পরিবারের লোকেরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছেন প্রিয়জনের সঙ্গে।
ডাঙাপাড়া গ্রামের ডালিম শেখ, সিনারুল শেখও রয়েছেন সেনাবাহিনীতে, একই গ্রামের সোহেল রানা, কাশেম সেখও রয়েছেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে। তাঁরা প্রত্যেকেই কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত রয়েছেন।
ডাঙাপাড়া গ্রামের ছেলে-বুড়ো সকলেই প্রার্থনা করছেন, ঘরের ছেলেরা যাতে শত্রুর মোকাবিলা করে দেশকে রক্ষা করতে পারে।
হরিহরপাড়ার মাফরুজ শেখ সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে কর্মরত। বর্তমানে তিনি শ্রীনগরে বিমানবন্দরে কর্মরত। টেলিফোনে মাফরুজ জানায়, ‘‘আমরা সজাগ রয়েছি। শত্রুর মোকাবিলায় প্রস্তুত আছি।’’ জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত জওয়ানেরা বন্ধু বা প্রিয়জনকে জানাচ্ছেন, যে কোনও মুহূর্তে আমাদের যুদ্ধের ময়দানে যেতে হতে পারে। নওদার আমতলার বাসিন্দা ইলিয়াস কাঞ্চন প্রায় এগারো বছর ধরে সেনাবাহিনীর শ্যুটার পদে কর্মরত। বর্তমানে তিনি প্রায় এক বছর যাবত রয়েছেন জম্মুর রাজৌরিতে। ইলিয়াসের পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে ইলিয়াসদেরও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। ইলিয়াসের স্ত্রী রাখি খাতুন বলেন, ‘‘ওর সঙ্গে নিয়মিত কথা হচ্ছে। ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত আছে। আমাদের অভয় দিলেও খুব ভয় হচ্ছে। কিন্তু ওর জন্য গর্বও হয়।’’
হরিহরপাড়ার অপর যুবক কুতুবউদ্দিন সেখ বলেন, ‘‘আমার এক বন্ধু লাদাখে কর্মরত। কয়েকদিন তার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। কিন্তু বন্ধুর জন্য খুব গর্ব অনুভব করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy