Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

কংগ্রেসের ভোট জোট পায়নি, মানছেন নেতারাও

করিমপুর ২ ব্লক কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি শান্তনু সিংহ রায়ের মতে, ‘‘এনআরসি-র ভয়ে ভোটারদের একটা বড় অংশ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। তা ছাড়া সিপিএম-কংগ্রেসের এই জোট গত বিধানসভা নির্বাচনের মতোই এ বারেও মানুষ মানেনি। দীর্ঘ চৌত্রিশ বছর সিপিএমের সঙ্গে যে কংগ্রেস সমর্থকেরা লড়াই করেছেন, তাঁদের এই জোট মানার কথা নয়।’’ 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কল্লোল প্রামাণিক 
করিমপুর শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০২:০৯
Share: Save:

কথায় বলে, ধন্য আশা কুহকিনী!

গত বিধানসভা ভোটের ফলাফল থেকে শিক্ষা নেয়নি বামেরা। কংগ্রেস যে তাদের আগের ভূমিকার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে, তা-ও মাথায় রাখেনি। কিন্তু করিমপুর উপ-নির্বাচনের ফলে ইঙ্গিত স্পষ্ট, কংগ্রেসের ভোট জোটের হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। ছ’মাস আগে লোকসভা নির্বাচনে আলাদা লড়ে যে ফল দুই দল করেছিল, তার ধারে-কাছেও নেই জোটের ফল।

গত লোকসভা নির্বাচনে করিমপুর বিধানসভা এলাকায় কংগ্রেসের আবু হেনা ২২০৯৭টি এবং সিপিএমের বদরুদ্দোজা খান ১৭৬১০টি ভোট পান। অথচ এ বার বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী, সিপিএমের গোলাম রাব্বির পেয়েছেন মাত্র ১৮ হাজারের কিছু বেশি ভোট। ভোটের প্রচারে দুই দলের তাবড় নেতারা এসেছিলেন। তার মধ্যে কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী, সোমেন মিত্র, আব্দুল মান্নানেরাও ছিলেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি তা পরিষ্কার।

ফলাফল বলছে, করিমপুর ২ ব্লক এলাকার ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে এক মাত্র মুরুটিয়া বাদে বাকি পাঁচটি পঞ্চায়েতে লোকসভায় সিপিএম একক ভাবে যে ভোট পেয়েছিল তার থেকে জোটের ভোট অল্প বেড়েছে। কিন্তু করিমপুর ১ ব্লকের আটটি পঞ্চায়েতের মধ্যে শুধু পিপুলবেড়িয়া পঞ্চায়েতে একক ভাবে সিপিএমের পাওয়া ভোট প্রায় সমান রয়েছে। বাকি সাতটি পঞ্চায়েতেই জোটপ্রার্থী ধরাশায়ী। প্রত্যাশিত ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, ছ’মাস আগের বাম ভোট যদি প্রায় অক্ষুণ্ণ থেকে থাকে, কংগ্রেসের বেশির ভাগ ভোট গেল কোথায়?

করিমপুর ২ ব্লক কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি শান্তনু সিংহ রায়ের মতে, ‘‘এনআরসি-র ভয়ে ভোটারদের একটা বড় অংশ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। তা ছাড়া সিপিএম-কংগ্রেসের এই জোট গত বিধানসভা নির্বাচনের মতোই এ বারেও মানুষ মানেনি। দীর্ঘ চৌত্রিশ বছর সিপিএমের সঙ্গে যে কংগ্রেস সমর্থকেরা লড়াই করেছেন, তাঁদের এই জোট মানার কথা নয়।’’

শান্তনু মনে করিয়ে দেন, গত লোকসভা ভোটে এখানে সিপিএমের থেকে কংগ্রেস প্রায় সাড়ে চার হাজার ভোট বেশি পেয়েছিল। এলাকার কংগ্রেস নেতাকর্মীদের দাবি ছিল, তাঁদের দল থেকেই কেউ জোটপ্রার্থী হোন। তাঁর দাবি, ‘‘দলের লোকেদের দাবি সোমেন মিত্রকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি জোটের স্বার্থে ভোটে লড়ার কথা বলেছিলেন।’’ তাঁর মতে, করিমপুর ২ ব্লকে কংগ্রেসের অনেকে সিপিএমকে ভোট দিলেও বেশির ভাগ সমর্থক জোটধর্ম মানেননি।

আবার করিমপুর ১ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সুভাষ মণ্ডলের দাবি, সিপিএমের সংগঠন সেখানে দুর্বল। তার উপরে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক দল ছেড়ে বিজেপিতে চলে যাওয়ায় অনেক সিপিএম সমর্থক তাঁর সঙ্গেই দল ছেড়েছে। সে কারণে জোট হলেও সিপিএম প্রার্থী ভোট পাননি।

সিপিএম প্রার্থী গোলাম রাব্বি কংগ্রেস সমর্থকদের ভূমিকা নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্যে যেতে নারাজ। তিনি শুধু বলেন, “এনআরসি-র আতঙ্কে এক প্রকার বাধ্য হয়েই বহু মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। পরে এই ভোটের ফলাফল দলীয় ভাবে পর্যালোচনা করে দেখা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Election Cpim Bjp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE