Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভীমপুরে ফাটল বিজেপির ঘরে

পঞ্চায়েত ভোটের ফল অনুযায়ী, ২২টি আসনের মধ্যে বিজেপির ছিল ১১টি। তৃণমূল পেয়েছিল দু’টি ভোট, কংগ্রেস-সিপিএম সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা পেয়েছিলেন ন’টি আসন। কিন্তু সেই হিসেব পাল্টে যায়।

ভয়ে ভয়ে রাস্তা পার। নিজস্ব চিত্র

ভয়ে ভয়ে রাস্তা পার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০২:৪২
Share: Save:

কংগ্রেস-সিপিএম সমর্থিত নির্দলদের দলে টানতে পারলেও নিজের দলের বিভাজন রুখতে পারল না বিজেপি। তাদের দলীয় কোন্দলের সাক্ষী রইল ভীমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত।

সোমবার ওই পঞ্চায়েতে বিজেপির দলীয় প্রার্থী ঝর্না মণ্ডলের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যান বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর আয়েত্রী বিশ্বাস। এবং জিতেও যান।

পঞ্চায়েত ভোটের ফল অনুযায়ী, ২২টি আসনের মধ্যে বিজেপির ছিল ১১টি। তৃণমূল পেয়েছিল দু’টি ভোট, কংগ্রেস-সিপিএম সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা পেয়েছিলেন ন’টি আসন। কিন্তু সেই হিসেব পাল্টে যায়।

স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকার বাসিন্দা তথা বিজেপির ২১ নম্বর জেলা পরিষদ আসন কমিটির সভাপতি মানিক সরকার তাঁর ঘনিষ্ঠ ঝর্না মণ্ডলের নাম প্রস্তাব করেন। কিন্তু তা মানতে পারেননি আর এক নেতা প্রদীপ বিশ্বাস। তিনি তাঁর স্ত্রী আয়েত্রী বিশ্বাসকে প্রধান করার জন্য প্রস্তাব করেন। বহু আলোচনার পরেও সমাধান সূত্র বেরোয়নি।

আর এই সুযোগেই ময়দানে নেমে পড়ে তৃণমূল। ঠিক হয়, আত্রেয়ীকে প্রধান পদে প্রার্থী করা হলে তাদের দুই সদস্য সমর্থন করবেন। এরই মধ্যে নির্দল ন’জনের মধ্যে দু’জন চলে আসায় আয়েত্রীর জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। প্রধান নির্বাচনের পরে দেখা যায়, বিজেপির দলীয় প্রার্থী ১০টি ভোট পেয়েছেন আর আয়েত্রী পেয়েছেন ১২টি ভোট।

বিজেপি ও তৃণমূল সূত্রের দাবি, আয়েত্রীকে নিয়ে আট বিজেপি সদস্য ছাড়াও দুই নির্দল ও দু’জন তৃণমূলের সদস্য এক দিকে ভোট দিয়েছেন। বাকিরা উল্টো গিকে। জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, “আমাদের দু’জন সদস্য ভোট দিতে ভিতরে গিয়ে দেখেন যে প্রধানের প্রশ্নে বিজেপি দুই ভাগ হয়ে গিয়েছে। সেই বিভাজনকে আরও প্রসারিত করতে আমাদের সদস্যেরা এক জনকে ভোট দিয়েছেন।”

তবে এই বিভাজনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল আগে থেকেই। এই ভীমপুর অঞ্চলে বিজেপিকে নেতৃত্ব দেন মানিক সরকার। কিন্তু ভোটের আগে বিজেপির লোকজন ভীমপুর বাজারে মার খাওয়ার পরে লোকজন নিয়ে এসে পাল্টা মার দেয়। ওই সময় থেকেই সমান্তরাল ভাবে উঠে আসতে থাকেন প্রদীপ বিশ্বাস। বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, নির্দলদের একাংশ ভোটের আগে থেকে তাঁর সঙ্গেই আলোচনা চালাচ্ছিল। ঠিক ছিল, তাঁর প্রস্তাবিত প্রার্থীকে নির্দলের ন’জন সমর্থন করবেন। শেষমেশ সাত জন নির্দল ঝর্নার সঙ্গে থাকলেও দু’জন আয়েত্রীর দিকে চলে যান।

যদিও বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারের দাবি, “শেষ মুহূর্তে আমরা আয়েত্রী বিশ্বাসকেই প্রধান পদে ঘোষণা করেছিলাম। তৃণমূল আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে।” তাহলে ঝর্না প্রার্থী হলেন কেন? মহাদেবের ব্যাখ্যা, “নির্দলরা ওঁকে চেয়েছিলেন। কেন বাকিরা দলের প্রার্থীকে ভোট দিলেন না, সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে যেটাই হোক, বোর্ড আমাদেরই হল!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Inner Clash BJP Panchayat Panchayat Election 2018
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE