সাত সকালে পুলিশ দেখেই ভ্রু কুঁচকে গিয়েছিল নিউ ফরাক্কা বাস স্ট্যান্ডের অনেকেরই। তবে কি বড় কিছু?
বাইরে গাড়ি রেখে স্টেশনে পা দিতেই প্রশ্নটা উড়ে এল, ‘বড় কিছু না কি স্যার?’
—তোদের কি ? যা না কাজ করগে? আর কথা বাড়ায়নি দোকানদার সফিকুল ।
চার কাপ চা শেষ। কিন্তু কই? ফোন গেল আইসির কাছে কাছে। কি উত্তর এল বোঝা গেল না। তবে মিনিট দশেকের মধ্যেই বড়বাবুও হাজির স্টেশনে। তাতে আশপাশের কপালে ভাঁজ আরও গাঢ় হল। বড়বাবু ফিসফিস করে বললেন, ‘‘খবর পাকা।’’ তাকে বাসে চড়তেও দেখা গিয়েছে কালিয়াচকে, খবর এসেছে এমনই। এই এল বলে। ইতিমধ্যেই এক পশলা বৃষ্টি শুরু হল।
ফের আর এক ভাঁড় চায়ে চুমুকটা দিয়েছেন পুলিশ অফিসার। হঠাৎই একটা বাস এসে থামল। অনেকেই নামলেন তা থেকে। কিন্তু ব্যাগ হাতে নামতে দেখা গেল বছর পঁয়ত্রিশের এক যুবককে। পরনে চেক লুঙ্গি, হাতের ব্যাগটি নোংরা তালি মারা।কোনও দিকে না তাকিয়েই ব্যাগ নিয়ে যুবকটি এগিয়ে গেল দাঁড়িয়ে থাকা রিকশার দিকে। ‘‘কি গো এনটিপিসি মোড় যাবে?’’
“এনটিপিসির মোড়? বাসের পরের স্টপেজই তো এনটিপিসির মোড়?” রিকশা ওয়ালার উত্তর শুনে আর দেরি না করে হন হন করে হাঁটতে শুরু করলেন সামনে।
এনটিপিসির মোড়ে যাবে। কিন্তু আগের স্টপে নামল কেন? সন্দেহ উঁকি মারতে শুরু করেছে পুলিশের। আইসি ইশারায় পিছু নিতে বলতেই দু’জন পুলিশ কর্মীও ধরলেন তার সঙ্গ। ইতিমধ্যেই স্টেশন চত্বর থেকে গাড়ি বের করে তাদের সামনে দিয়েই হুস করে এগিয়ে গেলেন আইসি-সহ অন্যরা। গিয়ে দাঁড়িয়েছেন এনটিপিসি মোড় আগলে। ব্যাগ হাতে যুবক তখন আপন মনে হেঁটে চলেছেন নিজে পথে। পিছনে দুই পুলিশ কর্মী। কলেজ পেরিয়ে ১০০ মিটার মত দূরে এনটিপিসি মোড়। ততক্ষণে রাস্তা আগলে দাঁড়িয়ে পড়েছেন সকলেই। পিছনে দু’জন। কাছে ভিড়তেই যুবকের ব্যাগ ধরে হ্যাঁচকা টান। ব্যাগ ছেড়ে পালাতে গিয়েই পিছলে পড়ল কাদা রাস্তায়। দুই অটো চালক সামনে।তাদের কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক পুলিশ কর্মী চিৎকার করে উঠলেন, ‘ধর ওকে ধর!’ আশপাশের লোকেরা ছুটে গিয়ে ধরতে দেরি করল না। ততক্ষণে ঘিরে ফেলেছে সাদা পোশাকের পুলিশ তাকে। একেবারে জরাজীর্ণ হাতের ব্যাগ খুলতেই চোখ কপালে উঠেছে পুলিশের। ব্যাগের মধ্যে রাখা ৯টি দেশি পিস্তল, ১৫ রাউন্ড তাজা গুলি। আর ১০ হাজার টাকার জাল নোট। আগ্নেয়াস্ত্রের সঙ্গে জাল নোটের কারবার।
উদয়বাবু বলছেন, “মুক্তাজুলকে ধরে সত্যি বড় তৃপ্তি হয়েছিল!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy