প্রতীকী চিত্র
হাত বাড়ালেই বাংলাদেশ। মাত্র পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকার জন্যও বর্ষার ভরা পদ্মা পেরিয়ে ওপারে চলে যায় পাচারকারীরা। বেআইনি পথে কেউ বাংলাদেশে যেতে গেলে দালালরা দেড় হাজার টাকা চায় বলে নানা প্রশাসনিক সূত্র থেকেই জানা গিয়েছে। তাই, এ বার জঙ্গি সন্দেহে মুর্শিদাবাদের ৯ যুবককে গ্রফতারের পরে প্রশ্ন উঠেছে, আল কায়দার সঙ্গে তাদের যোগসূত্রের পথ কি পাচারকারীদের পথের সঙ্গেও মিলছে? শুক্রবার রাতে মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত ৬ জনকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বিএসএফের শিবিরে। প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এনআইএ নিরাপত্তার কারণেই ধৃতদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শিবিরে নিয়ে যায়। ভোর হতেই বেরিয়ে যায়। কিন্তু সেক্ষেত্রেও প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশের আশ্রয়ে না গিয়ে বিএসএফের শিবিরে ধৃতদের নিয়ে যাওয়ার পিছনে সীমান্তের ভূমিকাও এনআইএ খতিয়ে দেখতে চেয়েছিল।
যদিও মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি কুণাল মজুমদার বলেন, ‘‘চোরাপাচারকারীদের মধ্যে সন্ত্রাসবাদী লুকিয়ে রয়েছে, এমন কোনও প্রমাণ এখনও পাইনি। তা ছাড়া, এই পথ পদ্মা দিয়ে। তাই বেশ ঝুঁকির। এ ছাড়া, সন্ত্রাসবাদী সন্দেহে যাদের ধরা হয়েছে, তারা সকলেই স্থানীয় বাসিন্দা। পাশের দেশ থেকে কেউ এসেছেন, এমন খবর পাইনি।’’
তবে ফরাক্কা থেকে লালগোলা, ভগবানগোলা থেকে জলঙ্গি মুর্শিদাবাদের ১২৫.৩৫ কিলোমিটার সীমান্ত পথের ৪২.৩৫ কিলোমিটার হল স্থল পথ। বাকি ৮৩ কিলোমিটার সীমান্ত ঘিরে রেখেছে গঙ্গা ও পদ্মা। সীমান্ত ঘেরা জেলার ১১টি ব্লকের কোথাও কোথাও বাংলাদেশ সীমান্ত ২ কিলোমিটার বা তারও কম। সীমান্ত পেরিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশ বা সে দেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ তাই চলে। রবিবার সংশোধনাগার সূত্রেই জানা গিয়েছে, রাজ্যের জেলগুলিতে এই মুহূর্তে বাংলাদেশি বন্দির সংখ্যা ১৯৩৫। এর মধ্যে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারেই রয়েছে ২৬০ জন। এদের ৯০ শতাংশই পাচারের সময় বা সীমান্তে অনুপ্রবেশের সময় বিএসএফের হাতে ধরা পড়েছে।
এনআইএ-র রিপোর্ট বলছে, বুদ্ধগয়া থেকে বর্ধমানের খাগড়াগড় কাণ্ড পর্যন্ত, যারাই ধরা পড়েছে তারা সকলেই একাধিকবার বাংলাদেশে যাতায়াত করেছে। বিএসএফ জানিয়েছে, সাত দিনে সুতি ও শমসেরগঞ্জ সীমান্তে এমন ৫ জন বাংলাদেশি ধরা পড়েছে যারা সুতির ছাবঘাটি হয়ে শমসেরগঞ্জের তিন গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে কেউ তিন দিন,কেউ ২০ দিন। কারা তাদের আশ্রয়দাতা তাদের পরিচয়ও পুলিশকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত পুলিশ এ কজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। প্রশ্ন উঠছে, এই ভাবেই অরক্ষিত সীমান্ত দিয়েই আল কায়দা বা কোনও জঙ্গি সংগঠনের কেউ আশ্রয় নেবে না তো এ পারের কোনও গ্রামে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy