সুনসান কান্দি আদালত। —নিজস্ব চিত্র
বিচারকের অপসারণের দাবিতে এক এজলাসে কর্মবিরতি চলছিলই। তার পরেও হাইকোর্ট বিচারকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় সোমবার থেকে টানা ১৫ দিনের জন্য কান্দি আদালতের ৯টি এজলাসে কর্মবিরতি শুরু করল আইনজীবীদের যৌথ মঞ্চ।
বিচারকের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে তাঁকে সরানোর দাবি নতুন নয়। এর আগে হুগলিতেও এই একই দাবিতে শ্রীরামপুর আদালতে কর্মবিরতি করা হয়েছিল। পরে সেই বিচারককে বদলিও করা হয়।
মুর্শিদাবাদের কান্দি আদালতে এ বার দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে অতিরিক্ত বিচারবিভাগীয় এজলাসের বিচারক হৈমন্তিকা সুনদাসের বিরুদ্ধে। এর আগেও, এপ্রিল থেকে টানা সাড়ে তিন মাস তাঁর এজলাস বয়কট করা হয়েছিল। আইনজীবীদের অভিযোগ, এজলাসে মক্কেলদের সামনেই কথায়-কথায় তিনি আইনজীবীদের অপমান করেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর দু’টি আইনজীবী সংগঠনের প্রায় ২২০ জন আইনজীবী বৈঠক করে তাঁর এজলাস বয়কয়টের সিদ্ধান্ত নেন। পরের দিন বয়কট শুরু হয়। কিন্তু এখনও তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি।
এ দিন সকালে আইনজীবীদের দুই সংগঠন কান্দি বার অ্যাসোসিয়েশন এবং প্লিডার্স অ্যান্ড অ্যাডভোকেটস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা যৌথ ভাবে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নেন। সেই যৌথ মঞ্চের সভাপতি সত্যব্রত ঘোষ বলেন, “হাইকোর্ট যদি ব্যবস্থা নিত, আমাদের আন্দোলনে নামতে হত না। বাধ্য হয়েই আমাদের কর্মিবিরতি করতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত অপমান সহ্য করে কাজ করা যায়!”
এই কর্মবিরতির জেরে আদতে নাকাল হচ্ছেন বিচারপ্রার্থীরা। যেমন কান্দি থানার রণগ্রামের মেহের শেখ। মারপিটের মামলায় ১৪ দিন ধরে জেলে বন্দি। এ দিন তাঁর জামিনের আবেদন পেশ হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু আইনজীবীরা কাজ না করায় তাঁকে ফের জেলে ফিরে যেতে হয়। আদালতের বাইরে দাঁড়িয়ে তাঁর মামা মিরাজুল শেখ বলেন, “সাধারণ মানুষের হয়রানি হচ্ছে। আইনজীবীরা কর্মবিরতি থেকে সরে অন্য পন্থায় আন্দোলন করলে ভাল করতেন।”
আমজনতার হয়রানির কথা মেনে নিচ্ছেন সংগঠনের সম্পাদক সফিউর রহমানও। তবে তাঁর বক্তব্য, “আমরা তো সাধারণ মানুষের জন্যই কাজ করি। কিন্তু ওই বিচারকের ব্যবহারে তাঁরাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। জেলবন্দি বিচারপ্রার্থীদের জামিন হয়ে গেলেও ইচ্ছাকৃত ভাবে কাগজপত্র ঠিক না করে বাড়তি এক দিন জেলে রেখে দিচ্ছে। এ রকম চলতে থাকায় কর্মবিরতি ছাড়া আর কোনও রাস্তা খোলা ছিল না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy