Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ঠিক করে প্রশ্ন করুন, ধমক বিচারকের

প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার জেরায় অভিযুক্ত পক্ষের দুই আইনজীবী তপনকুমার জানা ও জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন ওই পুলিশ অফিসারকে।

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ০২:০১
Share: Save:

বহরমপুরের আশাবরী কাণ্ডে তিন মহিলা খুনে মূল অভিযুক্ত নিত্যানন্দ দাসকে শনিবার মুর্শিদাবাদ জেলা ও দায়রা বিচারক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে ফের হাজির করা হয়। উপস্থিত ছিলেন মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার সুব্রত ভট্টাচার্যও। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার জেরায় অভিযুক্ত পক্ষের দুই আইনজীবী তপনকুমার জানা ও জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন ওই পুলিশ অফিসারকে। পাল্টা প্রশ্ন করেন, সরকারি পক্ষের আইনজীবী গোরা সেন ও প্রশান্ত দত্ত-ও। আর, অভিযুক্ত নিত্যানন্দ, জিনসের প্যান্ট, বাসন্তী রঙের জামা, ঝকঝকে স্নিকার পায়ে, সারাটা পর্ব ছিলেন মগ্ন শ্রোতা।

তপন: মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করে পাঠানোর পর ঘরটা খোলা রেখেছিলেন? হ্যাঁ কি না বলুন।

গোরা: হ্যাঁ, কি না দিয়ে উত্তর হয় না।

সুব্রত: সেই অবস্থাতেই ফ্ল্যাটটা বন্ধ করি, তার আগে সিজার করা হয়েছিল।

বিচারক: আপনার প্রশ্নটা পরিষ্কার করুন, মৃতদেহ সরানোর পর ঘরটি আর সেই অবস্থায় থাকে কি?

তপন: আপনি কি ওই ফ্ল্যাটের বাথরুম থেকে কিছু সংগ্রহ করেছিলেন?

সুব্রত: হ্যাঁ। মেঝে থেকে রক্ত সংগ্রহ করেছিলাম।

তপন: রক্ত কি ফরেনসিক এক্সপার্টের কাছে পাঠিয়েছিলন?

সুব্রত: হ্যাঁ।

তপন: ফরেনসিক এক্সপার্টকে কি ঘটনাস্থলে আসার জন্য আবেদন করেছিলেন?

সুব্রত: ফিঙ্গার প্রিন্ট এক্সপার্টকে ঘটনাস্থলে আসার জন্য বলেছিলাম।

তপন: সিকিউরিটি গার্ড ও দোকানদার আপনাকে কোনও বিবৃতি দেননি। আপনি তাদের দিয়ে সই করিয়ে নিয়েছেন। আপনি ভয় দেখিয়ে তাঁদের মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করিয়েছেন।

বিচারক: এক বার বলেছেন নিজে লিখেছেন, আর এক বার বলছেন ভয় দেখিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন। আপনি ঠিক ভাবে প্রশ্ন করুন।

তপন: অভিযুক্তকে শিলিগুড়ির হোটেল থেকে গ্রেফতার করেছিলেন? নাকি আটক করেছিলেন?

সুব্রত: জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসেছিলাম।

তপন: গ্রেফতারের সময় মেমো অব অ্যারেস্ট দিয়েছিলেন?

সুব্রত: হ্যাঁ।

তপন: তাতে সময়, তারিখ ও স্থানের উল্লেখ আছে?

সুব্রত: হ্যাঁ আছে।

তপন: মেমো অব অ্যারেস্ট কোথায় জমা দিয়েছিলেন?

সুব্রত: বহরমপুর থানায়।

তপন: ফ্ল্যাটের ভিতরের ও বাইরের ফটোগ্রাফ নিয়েছেন?

সুব্রত: হ্যাঁ।

তপন: ঘটনাটি ফার্স্ট ফ্লোরে, না গ্রাউন্ড ফ্লোরের?

সুব্রত: গ্রাউন্ড ফ্লোরের।

তপন: ওই ফ্লোরে আর কতগুলো ফ্ল্যাট আছে?

সুব্রত: ডিজি ওয়ান ও ডিজি টু আছে।

তপন: প্রতিবেশী ফ্ল্যাট ওনারদের বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন?

সুব্রত: না। ফ্ল্যাট গুলো তালাবন্ধ ছিল।

তপন: ঘটনাস্থলের সাইট প্ল্যান তৈরি করেছেন?

সুব্রত: না। পুরসভা থেকে নিয়েছি।

তপন: ঘটনা স্থলে কতবার গিয়েছেন?

বিচারক: এই প্রশ্ন মামলার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়। আপনাকে একটিও অপ্রাসঙ্গিক শব্দ বলতে দেব না আর।

সুব্রত: ঘটনাস্থল থানা থেকে কাছেই। তাই অন্তত ২০ বার গিয়েছি।

তপন: ঘটনা স্থলের ফ্ল্যাটের জানালা থেকে পাশের ফ্ল্যাটের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা যায়?

সুব্রত: না, যায় না।

বিচারক: আমার মনে হয় আপনার সব প্রশ্ন করা হয়ে গিযেছে। এখন প্রশ্ন করার জন্য প্রশ্ন করছেন।

তপন: গয়নার টিআই প্যারেড করার জন্য আদালতের আদেশ নিয়েছেন?

সুব্রত: হ্যাঁ। নিয়েছি।

তপন: সুরতহাল করতে কত সময় লেগেছিল?

সুব্রত: সাড়ে সাতটা থেকে সাড়ে ৮টা।

তপন: ভিসেরা রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন?

সুব্রত: প্রয়োজন মনে করিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Judge Lawyer Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE