Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শিক্ষক ভোটে জয়ী বামেরা

দীর্ঘদিন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতির ভোটই হয়নি। মাস দুয়েক আগে থেকেই শিক্ষক সমিতি চাঙ্গা হয়ে ওঠে। ভোট করার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কল্যাণী শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৯ ০৩:১১
Share: Save:

ভাটার বাজারে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতির ভোটে বিপুল ভাবে জিতলেন বামপন্থীরা। সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ পদে বামপন্থী প্রার্থীরা জিতেছেন। ১০ কার্যনির্বাহী পদের মধ্যে সাতটিতে জিতেছে বাম। আর মাত্র তিনটিতে জিতেছে তৃণমূল অনুগামীরা।

শুক্রবার ওই ভোটের পরে বেশি রাতে ফল জানা গিয়েছে। অবশ্য শিক্ষক সমিতির ভোটে ওয়েবকুটা এবং ওয়েবকুপা সরাসরি সংগঠনের নামে ভোটে লড়েনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, সরাসরি কোনও সংগঠনের নামে অতীতেও ভোট হয়নি। তবে প্রার্থী তারাই ঠিক করে দেয়।

দীর্ঘদিন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতির ভোটই হয়নি। মাস দুয়েক আগে থেকেই শিক্ষক সমিতি চাঙ্গা হয়ে ওঠে। ভোট করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। পাঁচ শিক্ষককে নিয়ে তৈরি হয় নির্বাচন পরিচালন কমিটি। সেই কমিটিই নির্বাচকমণ্ডলী গড়া, ব্যালট তৈরি, ভোটগণনা সব কাজ করেছে। এরই মধ্যে কর্তৃপক্ষ সমিতির ঘরের চাবি নিয়ে নেন। ফলে ভোট কোথায় হবে তা নিয়েই সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। পরে খোলা আকাশের নীচেই ভোটের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এই ভোটে বামেদের জয় নিয়ে অনেকেই বিস্মিত। তবে বহু শিক্ষকের দাবি, এটা প্রত্যাশিত ছিল। বামপন্থী শিক্ষকেরা যে ভাবে সারা বছর নানা বিষয় নিয়ে লড়াই করেছে, তার ফল মিলেছে। কিছু দিন আগেই শিক্ষকদের বায়োমেট্রিক হাজিরা থেকে সমিতির ঘরের চাবি নিয়ে নেওয়া, সব ঘটনায় বামপন্থী শিক্ষকেরা সরব ছিলেন।

বছরখানেক ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষক অভিযোগ করছিলেন, কর্তৃপক্ষ বিধিবদ্ধ সংস্থাগুলিকে পঙ্গু করে অগণতান্ত্রিক নানা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে। বামমনস্ক শিক্ষকেরা সে সব নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিকেলের আগে সভা করা যাবে না বলে নির্দেশ জারি করলে সেই নির্দেশের বিরুদ্ধেও ওয়েবকুটা সরব হয়। বামবিরোধী শিক্ষকেরাই জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার কোনও ইউনিট নেই। সদস্যেরা বহুধাবিভক্ত। অনেকে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শিক্ষক-গবেষকদের সমস্যা নিয়ে মুখ খুলতেন না। এবং এ বারের ভোট ছিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই।

তবে ওয়েবকুপা-র একাংশের মতে, ভোটের কিছু দিন আগেই সংগঠনের মূল মাথা শারীরবিদ্যার অধ্যাপক গৌতম পাল সহ-উপাচার্য হয়ে যান। ফলে তিনি ভোটে লড়তে পারেননি। গৌতমবাবু ভোটে লড়লে হয়তো ফল অন্য রকম হতে পারত। এর আগের ভোটে কোনও সংগঠনের প্রত্যক্ষ সমর্থন ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ পদে জিতেছিলেন গৌতম। তিনি বোটের ময়দানে না থাকায় বামবিরোধীরা অনেকটাই পিছিয়ে যায়।

বামপন্থীদের মধ্যে কার্যনির্বাহী কমিটির ভোটে সবচেয়ে বেশি ভোটে জিতেছেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক প্রবীর প্রামাণিক। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সব সময়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলে এসেছি। তাই সাধারণ শিক্ষকেরা আমাদের উপরে ভরসা রেখেছেন। নানা দাবিতে আমাদের সরব হতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalyani Kalyani University CPM TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE