প্রকৃত উপভোক্তাকে বঞ্চিত করে প্রায় একই নামের অন্য এক মহিলাকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা দেওয়ায় ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূল নেতা আনারুল ইসলামের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার হরিহরপাড়ার বিডিওর প্রতি তিনি ওই নির্দেশ দেন।
গত ২৭ অগস্ট হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তরতিপুর গ্রামের নেগার বিবি ও সাকিনা বিবি। তাঁদের আইনজীবী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘‘গত ৩০ অগস্ট শুনানির পরেই বিডিওকে দ্রুত রিপোর্ট জমা দিতে বলেন বিচারপতি। গত সোমবার ওই দুই মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রাপ্য টাকার প্রথম কিস্তি জমা দেওয়া হয়েছে বলে বিডিও এ দিন আদালতে জানান। পঞ্চায়েত প্রধানকে শো-কজ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।’’ তার পরেই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৪০ হাজার টাকা করে তিন কিস্তিতে মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। নেগার বিবি ও সাকিনা বিবি বলেন, তাঁদের নামে বরাদ্দ প্রথম কিস্তির টাকা অন্যদের দেওয়া হয়েছে জেনে মাস তিনেক ধরে তাঁরা প্রধান ও বিডিও-র কাছে দরবার করেছেন। হাইকোর্টে মামলা করার পরে গত সোমবার তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যকাউন্টে টাকা ঢুকেছে।
পঞ্চায়েত প্রধান আনারুল ইসলাম বলেন, ‘‘ব্লকের কর্মীদের প্রযুক্তিগত ভুলে এক জনের টাকা অন্য জনের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল। তাঁদের থেকে তা ফেরত নিয়ে প্রকৃত প্রাপকদের অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয়েছে।’’ হরিহরপাড়ার বিডিও পূর্ণেন্দু সান্যাল বলেন, ‘‘রায় এখনও হাতে পাইনি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’’ ব্লকের কর্মীদের ‘প্রযুক্তিগত ভুল’ নিয়েও তিনি কিছু বলতে চাননি।
কংগ্রেসের ধরমপুর অঞ্চল সভাপতি সামিউল ইসলামের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘ওই চার মহিলার নামের মধ্যে অনেকটা মিল থাকলেও তাঁদের বাবা-মায়ের নাম পৃথক। তাই নাম বিভ্রাটের অছিলা দেখিয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে ওই দুই মহিলাকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। আসলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা পেতে ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার অবৈধ লেনদেন চলছে। তাই এই সব ঘটছে।’’
দুই মহিলার আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘কয়েক মাস ধরে নেগার বিবি ও সাকিনা বিবির বহু আবেদন নিবেদন অগ্রাহ্য করা হয়েছে। শেষে হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করায় ওই তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করেছেন প্রধান। তাই তাঁকে শুধু শো-কজ নয়, তাঁর বিরুদ্ধে অবিলম্বে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলেছেন বিচারপতি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy